Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভাতেও ভারত-পাক যুদ্ধের প্রস্তুতি তুঙ্গে

তবে ইতিহাস বলছে, এই দ্বৈরথ নতুন কিছু নয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটেছে কাশ্মীর নিয়ে। ২০১৪ সালে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল মোদী এবং তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠকের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share: Save:

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের পরে এ বার বৃহত্তর মঞ্চে বাগ্‌যুদ্ধে নামতে চলেছে ভারত এবং পাকিস্তান। সেপ্টেম্বরেই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে ফের মুখোমুখি হবে দু’দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশলগত রাজনীতিতে এর গুরুত্ব দু’টি কারণে কিছুটা বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, এক মাস আগেই জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়া নিয়ে চলছে দ্বিপাক্ষিক তোলপাড়। বিভিন্ন শক্তিশালী রাষ্ট্রও নিজেদের স্বার্থে এই দ্বৈরথে সামিল হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে উপত্যকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিকটি নিয়েও। দ্বিতীয়ত, পাঁচ বছর পর রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতা দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথম বার জিতে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে তিনি নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন সাধারণ সভার অধিবেশনের সময়ে। তার পর লাগাতার পাঁচ বছর প্রয়াত বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেই দেখা গিয়েছে ভারতের দুর্গ সামলাতে।

তবে ইতিহাস বলছে, এই দ্বৈরথ নতুন কিছু নয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটেছে কাশ্মীর নিয়ে। ২০১৪ সালে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল মোদী এবং তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠকের। মোদী প্রথমে তাঁর বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘‘আমার সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা এবং শান্তির পথকেই অগ্রাধিকার দিয়ে এগোবে। এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানও।’’ সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ডাকও তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে এবং আইএসআই-এর চাপে সেই সময়ে ব্যক্তিগতভাবে চাইলেও ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে পারেননি নওয়াজ। বলেছিলেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যার উপরে আমরা পর্দা ফেলে দিতে পারি না।’’ কাশ্মীরের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে ভারত, সরাসরি সে দিন এ ভাবেই তোপ দেগেছিলেন নওয়াজ। স্বাভাবিক ভাবেই এর পরে আর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করা সম্ভব হয়নি।

২০১৫-য় সুষমা বলেছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করুক পাকিস্তান, ভারত বসে কথা বলতে রাজি।’’ সেই আহ্বানের তোয়াক্কা না করে কাশ্মীরের ফাটা রেকর্ডই বাজিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তিন প্রজন্মের কাশ্মীরিরা অত্যাচারের শিকার।’’ এর পর ২০১৬ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে কখনও বালুচিস্তান নিয়ে সরব হয়েছেন সুষমা। কখনও বা বলেছেন, ‘‘ভারত বিদ্বানদের জন্ম দেয় আর পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের।’’ ২০১৮ সালে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ইমরান খান। কিন্তু সাধারণ অধিবেশনে ভারত-পাক যুদ্ধের পরিবেশ বদলায়নি। সে বার পরিকল্পনা হয়েছিল দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হবে। কিন্তু সেটিও যথারীতি ভেস্তে যায়। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি ২০১৪ সালের পেশোয়ারের স্কুলে হামলা নিয়ে আক্রমণ করে বসেন ভারতীয় নেতৃত্বকে। সুষমা বলেন, ‘‘মিথ্যের বেসাতি করছে পাকিস্তান।’’ তিনি বলেন, ‘‘অনেক বারই ইসলামাবাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তা শেষপর্যন্ত ভেস্তে গিয়েছে পাক-ব্যবহার এবং মানসিকতার জন্য।’’

২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে এই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি হবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy