—প্রতীকী ছবি।
নাইজিরিয়ার বৃহত্তম শহর লাগোসে দশ বছর বাস করছি। ফলে খুব কাছ থেকে দেখেছি এ দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া। এবং পদে পদে অনুভব করেছি, ভারতের থেকে এ দেশের ভোট-ছবি কতটা আলাদা।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজিরিয়া। আফ্রিকা মহাদেশের সব থেকে জনবহুল দেশ এটি। ২৩ কোটি মানুষ বাস করেন এখানে। ১৯৯৯ পর্যন্ত দফায় দফায় সামরিক শাসন ছিল এই দেশে। ১৯৯৯-এর ২৯ মে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। খুবই দরিদ্র এই দেশটির সাধারণ মানুষজন খুবই শান্তিপ্রিয়। সেটা বোঝা যায় নির্বাচনের সময়েও। ভোটে বোমাবাজি, মারামারি, বুথ দখল এ সব কোনও ঘটনাই ঘটে না এখানে। গত ১০ বছরে তিনটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেখেছি। প্রতিবারই ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে।
প্রেসিডেন্ট এ দেশের সর্বপ্রধান প্রশাসনিক কর্তা। প্রত্যেক চার বছর অন্তর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে তাঁর মেয়াদকালের মধ্যে কোনও প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ভাইস প্রেসিডেন্টকে প্রেসিডেন্ট পদে উত্তীর্ণ করা হয়। যেমন হয়েছিল ২০১০-এ, প্রেসিডেন্ট উমারু মুসা ইয়ার'আদুয়া-র মৃত্যুর পরে। ভাইস প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন তখন থেকে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোট হল।জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশের ১৫তম প্রেসিডেন্ট হয়েছেন বোলা আহমেদ তিনুবু। তিনি অল প্রোগ্রেসিভ কংগ্রেস (এপিসি)-র নেতা। নাইজেরিয়ায় দু’টি প্রধান রাজনৈতিক দল রয়েছে— এপিসি এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)।
এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে বা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে বুঝেছি,নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। দু’টি বা তিনটি রাউন্ডে এই ভোট পর্ব সম্পন্ন হয়। ভোট হয় দু’টি ভাগে। ফেডারেল লেভেলে প্রেসিডেন্ট বা রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করা হয়। লেজিসলেচার লেভেলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির দু’টি কক্ষের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করা হয়। নিম্নকক্ষ অর্থাৎ হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের সদস্য সংখ্যা ৩৬০, উচ্চকক্ষ, অর্থাৎ সেনেটের সদস্য সংখ্যা ১০৯। পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে ইন্ডিপেনডেন্ট ন্যাশনাল ইলেকশন কমিশন বা আইএনইসি।
ভোট সাধারণত হয় স্কুল-কলেজে, কোনও ছুটির দিনে। গত বছর ভোট হয়েছিল শনিবার। শুক্রবার থেকে স্কুল-কলেজ ও সরকারি দফতর বন্ধ রাখা হয়েছিল। খোলা ছিল শুধু ব্যাঙ্ক ও অত্যাবশ্যক পরিষেবা। ভোটের দিন ‘নো মুভমেন্ট ডে’ ঘোষণা করা হয়।
ভোটের ছ’মাস আগে প্রচার শুরু হয়ে। র্যালি, পদযাত্রা, সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করেন প্রার্থীরা। তবে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ভোট চাওয়া বা সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রার্থীর কথাবার্তা বলার রেওয়াজ এখানে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy