কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাস্টিন ট্রুডোর সময় ফুরিয়ে এসেছে। জানুয়ারি মাসেই তিনি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন। আগামী ৯ মার্চ কানাডার লিবারাল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হবেন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে। নিজের ১০ বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বের কথা বলতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) কেঁদে ফেললেন ট্রুডো। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কানাডার উপর বাড়তি শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি আসছে। কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন ট্রাম্প। পরে তা স্থগিত রাখা হয়। ট্রুডো সে সব কথা বলতে গিয়ে জানান, সব সময় তিনি কানাডার স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কানাডাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন নিজের সব সিদ্ধান্তে।
বৃহস্পতিবার কানাডার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিজের ১০ বছরের সময়কালের স্মৃতিচারণা করছিলেন ট্রুডো। তিনি বলেন, ‘‘আমি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অফিসে যত দিন ছিলাম, ব্যক্তিগত স্তরে সব সময়ে দেশের, দেশের মানুষের ভাল চেয়েছি। এই শেষ সময়েও আমি বলতে চাই, কানাডিয়ানদের আশাহত করব না।’’ কথা বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ট্রুডো। তাঁর চোখ ছলছল করে ওঠে।
আরও পড়ুন:
কানাডার পণ্যের উপর ট্রাম্প যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তা আচমকা স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেন ট্রুডো। সঙ্গে কানাডাবাসীকে সতর্ক করে এ-ও জানান, ভবিষ্যতে আরও কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে তাঁদের।
ট্রুডো জানান, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ, পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট এবং ট্রাম্পের শাসনকাল পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ১০ বছর ট্রাম্পকে পেয়েছি। কানাডাবাসীর সেবা করতে পেরে আমি ধন্য।’’ তবে আমেরিকার শুল্কের প্রসঙ্গে কানাডা কোনও ভাবেই পিছু হটবে না, জানিয়ে দিয়েছেন ট্রুডো। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল কর সম্পূর্ণ রূপে তুলে নিতে ওদের বাধ্য করা। তার জন্য আমাদের আরও কঠোর হতে হবে।’’
কানাডার উপর যখন ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প, তখনও কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন ট্রু়ডো। তিনি জানান, কানাডাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে আমেরিকার পণ্যের উপর। পরে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়। আপাতত আমেরিকাও শুল্ক স্থগিত রেখেছে। ট্রুডোর মতে, কানাডার কঠোর অবস্থানের জন্য ট্রাম্প শুল্ক স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন।
কানাডায় ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কমেছে। সেই কারণেই জানুয়ারি মাসে পদত্যাগের কথা জানান ট্রুডো। তার পর দু’মাস বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন। ট্রুডো জানান, কানাডা এবং মেক্সিকো— এই দুই প্রতিবেশীর উন্নতি হলেই আমেরিকারও উন্নতি হবে।