গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ভারত-চিন সম্পর্কে মতের অমিল, মনান্তর এবং কথার খেলাপ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু ডোকলাম সংঘাতের দীর্ঘ আড়াই বছর পর এই প্রথম কড়া বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ল নয়াদিল্লি ও বেজিং। আজ থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গণ্য হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। এর পরেই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ভারতের এই পদক্ষেপ ‘বেআইনি এবং অন্তঃসার শূন্য’। খানিকটা হুমকির স্বরেই বলা হয়েছে, ভারত যেন চিনের সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেয়।
কালবিলম্ব না করে কড়া প্রত্যুত্তর দিয়েছে ভারতও। বিদেশ মন্ত্রকের সাংবাদিক সম্মেলনে মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ জানিয়েছেন, ‘‘চিন-সহ কোনও দেশ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করবে, এটা আমরা আশা করি না। একই ভাবে আমরাও অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মুখ বন্ধই রাখি।’’ এখানেই না থেমে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের একটা বড় এলাকা চিন দখল করে রেখেছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একটি অংশও বেআইনি ভাবে দখলে নিয়েছে চিন।’’
গত দু’বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে ‘ওবর’ প্রকল্পের অর্ন্তগত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের বিরোধিতা করে চলেছে নয়াদিল্লি। ওই করিডর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে যাচ্ছে এবং সেটা পাকিস্তান বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে– এটাই মূল যুক্তি সাউথ ব্লকের। যথারীতি তাতে এখনও কর্ণপাত করেনি বেজিং। আজও রবীশ কুমার বিষয়টির পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ‘‘ভারত ক্রমাগত চিন এবং পাকিস্তানকে তথাকথিত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের প্রকল্পগুলি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এসেছে। ১৯৪৭ সাল থেকে ওই এলাকা বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে পাকিস্তান।’’
দু সপ্তাহ আগেই তামিলনাড়ুর মমল্লপুরমে সাড়ম্বরে বিজ্ঞাপিত হয়েছে ভারত এবং চিনের মৈত্রী। সেখানে দু’দেশের মধ্যে থমকে থাকা ভারত-চিন সীমান্ত আলোচনা দ্রুত শুরু করার প্রশ্নে সহমত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। আজ সে কথা উল্লেখ করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।
কাশ্মীর নিয়ে বাগযুদ্ধের মধ্যেই চিন আজ প্রকাশ্যে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের। সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান সংক্রান্ত নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ-র খাঁড়ার তলায় থাকা ইসলামাবাদকে সাময়িক স্বস্তি দিয়ে বেজিং জানিয়েছে, কাউকে ‘শাস্তি দেওয়া’ ওই সংস্থার উদ্দেশ্যই নয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এফএটিএফ-এর কালো তালিকার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে পাকিস্তান। এই মুহূর্তে চিনের প্রতিনিধি এফএটিএফ-র প্রেসিডেন্ট পদে। মূলত তারাই এত দিন ঠেকিয়ে রেখেছিল পাকিস্তানের অবনমন। ভবিষ্যতেও তারা যে এই পথেই হাঁটবে, তা স্পষ্ট করে আজ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, বেজিং বিশ্বের টাকা নয়ছয় সংক্রান্ত নজরদারি সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করবে যাতে ইসলামাবাদকে সাহায্য করা যায়। পাকিস্তানের সন্ত্রাস-বিরোধী ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করাটাই চিনের আশু লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy