ছবি: রয়টার্স।
আগামী চার মাসে মাস্ক পরা-না পরার উপর নির্ভর করছে অন্তত ১৪ হাজার প্রাণ! আমেরিকার ভবিষ্যৎ গণনা করে এমনই রিপোর্ট দিল ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়।
টিকাকরণ জোর গতিতে চলছে এ দেশে। কিন্তু তা হলেও মাস্ক পরা ও দূরত্ববিধি মেনে চলার উপরে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। অন্যথায় কী হবে, সে বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করল ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট ফর হেল্থ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনস’। তাদের তৈরি নয়া মডেলে দাবি করা হয়েছে, আগামী ১ অগস্টের মধ্যে আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে কমপক্ষে ৬ লক্ষ ১৮ হাজার ৫২৩। যদি ৯৫ শতাংশ বাসিন্দা মাস্ক পরেন, সে ক্ষেত্রে প্রাণহানি কমে হবে ৬ লক্ষ ৪ হাজার ৪১৩ জন।
উল্টো ছবিটাও প্রকাশ করা হয়েছে। টিকাকরণের পরে যদি সবাই মাস্কহীন পুরোনা জীবনে ফিরে যান, সে ক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৭৩। অর্থাৎ আগামী চার মাসে আরও ১ লক্ষের বেশি মৃত্যু হবে। বর্তমানে আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৪০।
আমেরিকায় প্রবীণ বাসিন্দাদের টিকাকরণ এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। ১৯ এপ্রিল থেকে ১৬ বছর ও তার ঊর্ধ্বে বয়স হলেই মিলবে প্রতিষেধক। কিন্তু টিকাকরণের সাফল্যের পরেও বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা: বি১১৭-এর মতো নতুন ব্রিটেন স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকাতেও। এর সংক্রমণ ও মারণ ক্ষমতা, দুই-ই বেশি। বিশেষজ্ঞদের অনেকের কথায়, ‘‘মনে করুন এটা একটা নতুন ভাইরাস।’’
তা ছাড়া দৈনিক সংক্রমণ এখনও বিপদসীমাতেই রয়েছে। শুক্রবার এক দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৮০ হাজার ১৫৭ জন। এই নিয়ে পরপর চার দিন ৭৫ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ। আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় এপিডেমোলজিস্ট অ্যান্টনি ফাউচি জানিয়েছেন, টিকাকরণে কাজ দিচ্ছে অনেকটাই।
কিন্তু ১০০ শতাংশ কার্যকরী নয়। তাই মাস্ক পরতে হবে। কোথাও ভিড় করা যাবে না। দূরত্ববিধি মানতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমার টিকা নেওয়া হয়ে গেলেও আমি কোনও ভিড়ে যাব না। বিশেষ করে যেখানে মাস্ক না-পরা লোকজনের ভিড়।’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র পক্ষ থেকে এই একই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনকে। টিকা নিলেও মাস্ক আবশ্যক। বরিস জনসনের সরকার সম্প্রতি জানায়, তারা বিধি হাল্কা করার কথা ভাবছে। হু জানিয়েছে, টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে করোনা-বিধি লঘু করলেই বিপদ বাড়বে।
আসলে টিকাকরণে অনেকটাই পিছিয়ে ইউরোপ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকা দেওয়া বন্ধ।
ও দিকে, ফাইজ়ারের টিকার সরবরাহ কম। এ অবস্থায় তারা রুশ ভ্যাকসিন আমদানির কথা ভাবছে। করোনাবিধিও জারি রয়েছে পুরোদমে। দেশবাসীকে দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এশিয়াতেও কিছু কিছু দেশে নতুন করে লকডাউন জারি হচ্ছে। গত সোমবার থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন চলেছে বাংলাদেশে। ইরানে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ১০ দিনের লকডাউন।
সংক্রমণ ও মৃত্যু, দুয়েতেই ব্রাজিল এখন দ্বিতীয় স্থানে। আমেরিকার পরেই। করোনায় ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর উদাসীনতাকেই দায়ী করা হচ্ছে দেশ জুড়ে। ‘গণহত্যা’র অভিযোগও তোলা হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি এমনই, দেশের সুপ্রিম কোর্ট স্বয়ং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে সেনেটকে। বোলসোনারো অবশ্য বলে যাচ্ছেন, তিনি নির্দোষ, বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থার হাতে ‘আক্রান্ত’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy