Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ইমপিচ করা হল ট্রাম্পকে, সেনেটে কী হয়, সে দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব

আমেরিকার ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প তৃতীয় প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গৃহীত হল। 

ইমপিচ করা হল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

ইমপিচ করা হল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩০
Share: Save:

পার পাননি ৪২ নম্বর। রেহাই পেলেন না ৪৫-ও। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ ও মার্কিন কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টির জন্য দেশের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ (পদচ্যুত) করার সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভস। আমেরিকার ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প তৃতীয় প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গৃহীত হল।

তবে তাঁর পূর্বসূরি, ৪২তম প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের মতো ট্রাম্পও গদি হারাবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ এর পরের ধাপে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া যাবে সেনেটে। হাউসের এই উচ্চকক্ষ রিপাবলিকানদের দখলে। ফলে সেখানে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে দুই-তৃতীয়াংশ সেনেটর ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কম। বুধবার যে হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, সেটি ডেমোক্র্যাটদের দখলে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ দু’টি। প্রথমত, তিনি আগামী নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা শুরুর জন্য ইউক্রেনকে চাপ দিয়েছিলেন। সেই মামলা চললে বাইডেনের ভোটে লড়া সম্ভব হত না। ফলে ট্রাম্পের এই চেষ্টাকে সরাসরি নির্বাচনী হস্তক্ষেপ বলা যেতেই পারে। এই প্রস্তাবে হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২৩০টি ভোট পড়েছে, আর তাঁর পক্ষে পড়েছে ১৯৭টি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিযোগ, তিনি মার্কিন কংগ্রেসে তাঁর বিরুদ্ধে চলা তদন্তে বাধা দিয়েছেন। মার্কিন সংবিধান অনুয়ায়ী, কংগ্রেসের কাজে বাধা দেওয়া গুরুতর অভিযোগ। কারণ কংগ্রেসের হাতেই কোনও প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। সেই অভিযোগেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ২২৯টি, আর পক্ষে ১৯৮টি। নিয়ম অনুযায়ী, হাউসে কোনও প্রস্তাবের পক্ষে ২১৬টি ভোট পড়লেই সেই প্রস্তাব পাশ হয়ে যাবে। ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের জন্য আনা দু’টি প্রধান প্রস্তাবই পাশ করে দেন হাউসের সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস সদস্যরা।

তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময় থেকেই ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ’, ‘আমার বিরুদ্ধে ডাইনি-খোঁজ শুরু হয়েছে’ ‘এ সব কিছুই একটা বড়সড় চক্রান্ত’— এই সব অভিযোগ এনে টুইটারে সমালোচনার ঝড় তুলতেন প্রেসিডেন্ট। বুধবার হাউসে শেষমেশ ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাশ হয়ে যাওয়ার পরেও ট্রাম্প টুইট করেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা রিপাবলিকানদের উপর আক্রমণ। এটা আমেরিকার উপরে আক্রমণ।’’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গোটা হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটরা যখন একসুর, তখন উল্টো পথে হাঁটলেন দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তুলসী গাবার্ড। তিনি কংগ্রেসের একমাত্র ডেমোক্র্যাট সদস্য, যিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে কোনও অবস্থান নেননি। যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে ‘ইয়েস’ বলার পরিবর্তে তিনি বলেছেন, ‘প্রেজেন্ট।’ তুলসী বলেছেন, ‘‘আমি মাঝামাঝি রয়েছি। ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারিনি, কারণ আমি জানি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভুল কাজ করেছেন। তবে আমি ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবে সায়ও দিতে পারছি না, কারণ বর্তমান প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে সরানোর কাজটি যেন কোনও বিভাজনের প্রক্রিয়ায় পর্যবসিত না হয়।’’

হাউস প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করার মানে অবশ্য এই নয় যে, কালকেই ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস ছেড়ে চলে যেতে হবে। মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সেনেট যত ক্ষণ না ট্রাম্পকে ইমপিচ করছে, তত ক্ষণ তিনিই প্রেসিডেন্ট। হাউসে গৃহীত ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাঠানো হবে সেনেটে। সেখানে তা নিয়ে সওয়াল হবে। যদি অন্তত ৬৭ জন (দুই-তৃতীয়াংশ) সেনেটর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তা হলেই পদত্যাগ করতে হবে ট্রাম্পকে।

আমেরিকার ইতিহাসে আগে যা কখনও হয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy