শি চিনফিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
স্বশাসিত হংকংয়ে নিজেদের রাশ টেনে ধরতে ওই এলাকাকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে চাইছে চিন। বৃহস্পতিবার সেই বিতর্কিত আইন পাশও হয়েছে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে। কিন্তু বেজিংয়ের ওই ইচ্ছার বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে আমেরিকা। সেই চাপ বাড়াতে এ বার নয়া কৌশল নিল ওয়াশিংটন। চিন ওই আইন পাশের পর দিনই, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এত দিন ধরে তাঁরা হংকংকে যে সব সুবিধা দিয়ে আসছিলেন তার কয়েকটি প্রত্যাহার করা হবে। হংকংকে রফতানি-সহ নানা ক্ষেত্রে সুবিধা দিয়ে আসছিল আমেরিকা। সেই সব সুবিধা কেড়ে নেওয়ার পথেই হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন দেশে আগত চিনা পড়ুয়াদের একাংশের উপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করতে চলেছে আমেরিকা।
দুনিয়া জুড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নিয়ে চিন ও আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছিল। সম্প্রতি তার সঙ্গে যোগ হয়েছে হংকং ইস্যু। বিশ্ব জুড়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই স্বশাসিত ওই এলাকায় নিজেদের আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা চালাচ্ছে বেজিং। সে জন্য ওই এলাকাকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আনার উদ্চিযোগ নিয়েছে চিন। কিন্তু হংকংয়ে চিনা আগ্রাসন নিয়ে প্রথম থেকেই সরব আমেরিকা। শুক্রবার হংকং ইস্যুতে ফের চিনকে বিঁধে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ওই শহরের দীর্ঘদিনের মর্যাদা খর্ব হতে বসেছে।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেছেন, ‘‘এটা হংকংয়ের নাগরিকদের জন্য যেমন দুঃখের, তেমনই চিন এবং বিশ্ববাসীর জন্যও।’’ চিনকে চাপে রাখতে, আমেরিকা হংকং-কে যে পৃথক ও বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল তা কাটছাঁট করার জন্যও প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
হংকংকে দেওয়া কী কী ধরনের সুবিধা খারিজ করছে ওয়াশিংটন? ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি, প্রযুক্তি সহায়তা, রফতানি ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে হংকংকে যে সব সুবিধা দেওয়া হত তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তবে এতে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রায় বিনা বাধায় ওই বিতর্কিত আইন পাশ হয়ে গিয়েছে চিনে। এরপর এনপিসির স্ট্যান্ডিং কমিটি ওই আইনটির খসড়া তৈরি করবে। তারপর সেটি ঘোষণা করা হবে। সে জন্য অবশ্য মাস দু’য়েক সময় লাগবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আইন পাশ হতেই ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং।
হংকংয়ে মাস্ক পরেই বিক্ষোভে জমায়েত।
আরও পড়ুন: মৃত্যু, আক্রান্তের সংখ্যায় ফের রেকর্ড দেশে, রেকর্ড সুস্থ হওয়ার সংখ্যাতেও
হংকং ছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগত চিনা পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পড়ুয়াদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, ‘‘বছরের পর বছর ধরে চিনা সরকার আমাদের শিল্পের গোপন তথ্য হাতিয়ে দেওয়ার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে।’’ ট্রাম্পের এই অভিযোগের ভিত্তি এফবিআইয়ের দেওয়া তথ্য। তাতে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থনৈতিক গুপ্তচরবৃত্তি ও প্রযুক্তি চুরির এক হাজার অভিযোগের তদন্ত করছে মার্কিন ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি, যার প্রতিটি ক্ষেত্রেই চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তথ্য বলছে, আমেরিকায় আগত বিদেশি পড়ুয়াদের মধ্যে চিন থেকেই সবথেকে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী আসে। সেই সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৭০ হাজারের মতো। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে সেই প্রক্রিয়া এমনিতেই বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘স্বর্ণযুগের এক বছর’, বর্ষপূর্তিতে মোদীর চিঠি দেশবাসীকে
এক সময় ভাইরাসের উৎস নিয়ে নিয়ম করে চিনকে বিঁধছিলেন ট্রাম্প। বেজিংয়ের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তুলে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, চিনকে আড়াল করতে গিয়ে বিশ্বকে করোনা-সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছে হু। এই অভিযোগ তুলে হু-এর অনুদানও স্থগিত করে দিয়েছিলেন তিনি। এর মাঝেই তিনি ঘোষণা করেছেন হু-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তাঁর দেশ। এখন, আমেরিকার চিন বিরোধিতার তালিকায় যোগ হয়েছে হংকং ইস্যুও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy