ছবি: এএফপি।
ভেস্তে গেল রাষ্ট্রপুঞ্জের জেরুসালেম প্রস্তাব। ভেটো দিয়ে কোনও মতে মুখরক্ষা করল আমেরিকাও। কিন্তু ভোটাভুটির ফল বুঝিয়ে দিল, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা এখন একঘরেই।
জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল, সেখান থেকেই উঠে এসেছিল বিরোধী-প্রস্তাব। নিরাপত্তা পরিষদে দাবি উঠেছিল, খারিজ করা হোক এই আমেরিকার এই অন্যায় স্বীকৃতি। গত কাল মিশরের তৈরি করা সেই খসড়া-প্রস্তাবে ভোট দিতে এসে পরিষদের ১৫টি দেশের মধ্যে ১৪টিই তাতে সায়ও দিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওয়াশিংটন তাতে ভেটো দেওয়ায় প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে গিয়েছে।
এটাই নিয়ম। পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্য হিসেবে আমেরিকা, চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও ব্রিটেনের মধ্যে যে কোনও একটি দেশ বেঁকে বসলেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। আর তা হওয়া মাত্রই ফের ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করে দিয়েছে বাকিরা। চলতি মাসের গোড়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই ঘোষণার পর থেকেই ফুঁসছিল প্যালেস্তাইন। আজ তাদের ভেটো দেওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘‘এটা জঘন্যতম অপরাধ। আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার পক্ষেও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে আমেরিকা।’’
সরাসরি ট্রাম্প বা আমেরিকার কথা না থাকলেও, জেরুসালেমকে ঘিরে যে অশান্তি ছড়াতে পারে, তার স্পষ্ট উল্লেখ ছিল ওই প্রস্তাবে। খসড়ায় এ-ও বলা হয়েছিল যে, জেরুসালেমের ইতিহাস, অবস্থান বা জনসংখ্যার কাঠামোয় যে কোনও ধরনের বদল আনার চেষ্টা অবৈধ এবং পরিষদের আগের সব প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাতিল বলে গণ্য করা উচিত। তাই আমেরিকা এতে ভেটো দেওয়ায় নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কথায়, ‘‘আমেরিকা আবারও বুঝিয়ে দিল যে, প্যালেস্তাইনিদের জাতিগত অধিক্ষার রক্ষার ব্যাপারে তাদের কোনও আগ্রহ নেই।’’
ওয়াশিংটন যদিও গোড়া থেকেই সওয়াল করে আসছে, ট্রাম্প বাস্তবকে স্বীকার করে নিয়ে আদতে ওই এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেই এগোতে চাইছেন। যে যুক্তি সম্পূর্ণ অবান্তর বলে আজ ফের মুখ খুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কাল জেরুসালেম প্রস্তাবের ভোটেও রাশিয়া বাকিদের মতো নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেন, ‘‘এমন আচরণ আমেরিকার সঙ্গে উপহাস। অত্যন্ত অপমানজনক। এতে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সম্পর্ক আরও খারাপ দিকেই যাবে।’’ খানিকটা হুমকি দেওয়ার মতো করেই তিনি জানান, ওয়াশিংটন এই অপমান ভবিষ্যতেও মনে রাখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy