ভারতীয় নৌসেনার হাতে আসছে এই রোমিও। ছবি সৌজন্য: লকহিড মার্টিন।
ভারতকে ২৪টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার বিক্রি করতে সবুজ সঙ্কেত দিল মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক। এই হেলিকপ্টারের সাহায্যে মহাসমুদ্রে লুকিয়ে থাকা শত্রু ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন আরও নির্ভুল লক্ষ্যে ধ্বংস করতে পারবে ভারত। ভারত মহাসাগরে বাড়তে থাকা চিনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে এই হেলিকপ্টার বিশেষ কার্যকরী হবে, এমনটাই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের। পোশাকি নাম এম এইচ ৬০আর হলেও সামরিক দুনিয়ায় এই হেলিকপ্টারকে সবাই ডাকেন রোমিও নামেই।
রোমিও নামের এই সি-হক হেলিকপ্টারটি বিশেষ ভাবে বানানো হয়েছে সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে থাকা শত্রু ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন ধ্বংসের জন্যই। পাশাপাশি শত্রু রণতরী ধ্বংস করা এবং সমুদ্রের বুকে তল্লাশি ও উদ্ধারকার্য চালাতেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে রোমিও।
গত বছরেই এই হেলিকপ্টার কিনতে ভারতের তরফ থেকে প্রস্তাব গিয়েছিল মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের কাছে। কারণ, লক-হিড মার্টিন নামের একটি মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা এই হেলিকপ্টার বানালেও তা কিনতে লাগে মার্কিন সরকারের সম্মতি। গত বছরেই মার্কিন কংগ্রেসের কাছে ভারতের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছিল সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘এই হেলিকপ্টার বিক্রি করা হলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের এক সহযোগীই আরও শক্তিশালী হবে। ভারত-মার্কিন কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রও আরও প্রসারিত হবে।’’
আরও পড়ুন: চিনের পাঠ্যবইতে রয়েছেন এই ভারতীয় চিকিৎসক, সে দেশে রয়েছে তাঁর মূর্তিও, কেন জানেন?
ভারতকে প্রায় ১৭,৮০০ কোটি টাকা দিয়ে ‘রোমিও’ হেলিকপ্টার বিক্রিতে সম্মতি দেওয়ার পাশাপাশি মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং শান্তির জন্য ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
ঠাণ্ডা যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়ে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে শীতলতাই ছিল বেশি। কিন্তু ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের উত্থান এবং ভারত মহাসাগরে চিনের বাড়তে থাকা সামরিক এবং বাণিজ্যিক প্রভাবের কারণে গত কয়েক বছরে অনেকটাই বদলেছে পরিস্থিতি। আমেরিকার পছন্দমাফিক রাস্তায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে না হাঁটায় পাকিস্তানও এখন নেই আমেরিকার সুনজরে। পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের বাড়তে থাকা আর্থিক সম্পর্কও কাছাকাছি আনছে নয়াদিল্লি আর ওয়াশিংটনকে। ভারতকে রোমিও বিমান বিক্রিতে সম্মতি দেওয়ায় স্রেফ ব্যবসার পাশাপাশি কৌশলগত বিষয়টিও জড়িত, এমনটাই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুরনো আমলের সি-কিং হেলিকপ্টারের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী এই রোমিও। রোমিও হাতে পেলে নিশ্চিত ভাবেই আরও শক্তিশালী হবে ভারতীয় নৌসেনা। ভারত মহাসাগরের বুকে লুকিয়ে সাবমেরিন পাঠানো আর অতটা সহজ হবে না চিনের কাছে। ভারত মহাসাগর জুড়ে চিনের পাশাপাশি টহল দেবে ভারতও, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমেরিকার কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy