বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশি টহল। বৃহস্পতিবার পোর্টল্যান্ডে। এএফপি
নির্বাচনের আগে থেকেই ভোট পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। নিজের হার সহজে মেনে নেবেন না বলেও একাধিক বার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে পিছিয়ে থাকলে সুষ্ঠু ভাবে গণনা করতে দেবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল ডেমোক্র্যাট শিবিরও। আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে দেখা গেল গত কাল থেকে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গণনা যত এগিয়েছে, একের পর এক প্রদেশে ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের এগিয়ে থাকার খবর যত এসেছে, বিভিন্ন প্রদেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামাও তত দ্রুত ছড়িয়েছে। রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে ওরেগনের উপদ্রুত শহর পোর্টল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক থেকে ফিনিক্স— একের পর এক শহর বিক্ষোভ, হামলায় বিধ্বস্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কার্যত কোনও তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ট্রাম্প কাল থেকে বলতে শুরু করেছেন, ভোট গণনা পদ্ধতিতে কারচুপি চলছে। রিপাবলিকানরা একাধিক প্রদেশের ফল নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত তো নিয়েইছেন, সেই সঙ্গে বিভিন্ন শহরে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছেন ট্রাম্প সমর্থকেরা। দেশ জুড়ে হামলাকারীদের মুখে মোটামুটি একটাই স্লোগান— ‘স্টপ দ্য কাউন্টিং’, ‘স্টপ দ্য স্টিল’। কোথাও গণনা কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে গণনা বন্ধ করতে উদ্যত হয়েছে ট্রাম্প অনুগামীরা। কোথাও ‘উই ডোন্ট ওয়ান্ট বাইডেন, উই ওনলি ওয়ান্ট রিভেঞ্জ’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তা দখল করে রেখেছেন রিপাবলিকানরা। চলছে দোকানে দোকানে ভাঙচুর, এমনকি, কোথাও কোথাও পুড়েছে জাতীয় পতাকাও। কোথাও আবার রিপাবলিকানদের সঙ্গে টক্কর দিতে রাস্তায় নেমেছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থকেরাও।
আরও পড়ুন: ৩টি মামলা ঠুকলেন ট্রাম্প, প্রেসিডেন্টের দৌড়ে পাল্লা ভারী বাইডেনের
গত কাল মাঝ রাতে ওয়াশিংটনে দুই পুরুষ ও এক মহিলা ছুরিবিদ্ধ হন। নিউ ইয়র্ক শহরে প্রথমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশ চললেও সেখান থেকেই পরে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্রও। কাল রাতেই অ্যারিজ়োনায় বাইডেন জিতে গিয়েছেন বলে ট্রাম্পপন্থী হিসেবে পরিচিত একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করার পরে ফিনিক্সের মেরিকোপা কাউন্টির একটি গণনা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এক দল ট্রাম্প সমর্থক। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ভোট গণনা বন্ধ করেত হবে। ওই চ্যানেলের একাধিক সাংবাদিককে হুমকি আর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে গত কাল থেকে। তবে ওই গণনা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কিলি ভার্ভেল জানিয়ে দেন, যা হচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই হচ্ছে। ফলে গণনা বন্ধের কোনও প্রশ্নই নেই। জিম উইলিয়ামস নামে ৬৭ বছরের এক কট্টর ট্রাম্প সমর্থক বলেই ফেললেন, ‘‘একমাত্র কারচুপি করেই বাইডেন অ্যারিজ়োনা জিততে পারেন।’’ মেরিকোপা কাউন্টি বোর্ডের সুপারভাইজার ডেমোক্র্যাট সমর্থক স্টিভ গ্যালারডো অবশ্য উন্মত্ত জনতার উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘ঠিক ভাবে ভোট গুনতে সময় লাগে। এটাই গণতন্ত্রের প্রমাণ, জালিয়াতির নয়।’’
আরও পড়ুন: সুতোয় ঝুলছে ট্রাম্প-বাইডেনের ভাগ্য! ৬ রাজ্যের গণনা শেষের অপেক্ষায় দু’পক্ষ
মিনিয়াপোলিস, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়ার মতো এলাকা থেকেও বিক্ষোভের খবর এসেছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এ বারে ভোট গণনা হচ্ছে না বলে ট্রাম্প অনুগামীরা যেমন আওয়াজ তুলেছেন, মিনিয়াপোলিস বা পোর্টল্যান্ডর মতো শহরে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। পোর্টল্যান্ডে তো বিক্ষোভ সামলাতে ন্যাশনাল গার্ড নামাতে বাধ্য হয়েছেন সেখানকার মেয়র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy