Advertisement
২৭ অক্টোবর ২০২৪
US Presidential Election 2024

কমলার পাশে উজ্জ্বল বিয়ন্সে

বিয়ন্সেরই গাওয়া গান ‘ফ্রিডম’-কে এ বার থিম সঙ্গীত হিসেবে বেছেছেন কমলা। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার। দেশের মহিলাদের অধিকার রক্ষার জন্য জোরদার লড়াই চান তিনি।

কমলা হ্যারিসের কর্মসূচীতে পপ তারকা পপ তারকা বিয়ন্সে।

কমলা হ্যারিসের কর্মসূচীতে পপ তারকা পপ তারকা বিয়ন্সে। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
হিউস্টন শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২০
Share: Save:

এখনই সময় নতুন গান গাওয়ার। টেক্সাসের কানায় কানায় পরিপূর্ণ অডিটোরিয়ামে সভা করছেন আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী তিনি। সভার শুরুতেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে উল্লসিত দর্শকদের এ কথাগুলোই সবার প্রথমে বললেন জনপ্রিয় পপ তারকা বিয়ন্সে।

বিয়ন্সেরই গাওয়া গান ‘ফ্রিডম’-কে এ বার থিম সঙ্গীত হিসেবে বেছেছেন কমলা। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার। দেশের মহিলাদের অধিকার রক্ষার জন্য জোরদার লড়াই চান তিনি। আমেরিকার যে যে প্রদেশে গর্ভপাত-বিরোধী কড়া আইন রয়েছে, প্রচারের শেষ পর্বে বেছে বেছে সেই সব প্রদেশেই দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা এ বারের নির্বাচনে তাঁর একমাত্র প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন কমলা। টেক্সাসের মতো প্রদেশে গত কাল বিশাল জনসভা করাও ছিল তাঁর সেই প্রচার কৌশলেরই অংশ। সঙ্গী হিসেবে তিনি কাল পেয়েছিলেন বিয়ন্সে এবং তাঁর মাকে। এমনিতে এই ধরনের রাজনৈতিক মঞ্চ এড়িয়েই চলেন বিয়ন্সে। কিন্তু গর্ভপাত নিয়ে নারীদের অধিকার রক্ষার যে লড়াই কমলা লড়ছেন, তাকে এড়িয়ে যেতে পারেননি পপ তারকাও।
টেক্সাস বরাবরই রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেই টেক্সাসেরই হিউস্টন শহরের অডিটোরিয়ামে যে জনসভায় কমলা কাল বক্তৃতা দিলেন, সেখানে এত বিপুল ভিড় আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলেই জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি। তবে ডেমোক্র্যাট নেতা-নেত্রীরা নিজেরাও স্বীকার করে নিচ্ছেন, এত ভিড়ের পরেও টেক্সাসের রায় সম্ভবত রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের দিকেই যাবে। তবু কমলার এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন তাঁর দলের নেতা-নেত্রী-সমর্থকেরা।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমেরিকার বেশ কিছু প্রদেশে গর্ভপাত-বিরোধী কঠোর আইন আনা হয়। সেই সময়ে বেছে বেছে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টে এমন তিন বিচারপতিকে নিয়োগ করেন, যাঁরা বরাবরই গর্ভপাতের ঘোরতর বিরোধী। বছর দু’য়েক আগে সেই সুপ্রিম কোর্টই আমেরিকার ঐতিহাসিক ‘রো ভার্সেস ওয়েড’ রায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যেখানে নারীদের গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-সহ ডেমোক্র্যাট নেতা-নেত্রীরা অবশ্য বহু বার ট্রাম্পের এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, যে প্রদেশে গর্ভপাত-বিরোধী কঠিন আইন আছে, সেখানকার মহিলাদের জীবনের ঝুঁকি স্বাভাবিক ভাবেই অনেকখানি বেড়ে যায়। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, ওই সব প্রদেশে শিশুমৃত্যুর হারও অনেক বেশি। কারণ গর্ভাবস্থায় অসুস্থ শিশু ভ্রূণকে মেরে ফেলা যে হেতু ওই প্রদেশগুলোয় নিষিদ্ধ, তাই সেখানে অসুস্থ শিশুর জন্মের হারও অনেকাংশে বেশি।

ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরলে শুধু বাছা বাছা প্রদেশ নয়, এর পর গোটা দেশেই গর্ভপাত-বিরোধী কঠিন আইন চালু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করছেন ডেমোক্র্যাটরা। কমলাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘অন্য প্রদেশে বসে যাঁরা এই সভা দেখছেন, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, নেভাডা, নিউ ইয়র্ক হোক বা ক্যালিফোর্নিয়া। আপনারা কেউ সুরক্ষিত নন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে একা সব প্রদেশ থেকে মহিলাদের এই অধিকার কেড়ে নেবেন। আমি শুধু বলতে চাই, একটা নির্বাচনই ফারাক এনে দিতে পারে।’’ বহু পুরুষ ভোটারও কমলার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তাঁদেরও মত, নারী শরীরের পূর্ণাঙ্গ অধিকার একমাত্র তাঁদেরই। বিয়ন্সে বলেছেন, ‘‘আমি এক জন মা হিসেবে এখানে এসেছি। এক জন মা যিনি নিজের এবং অন্য আরও অনেক অনেক কন্যাসন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে
ভীষণ উদ্বিগ্ন।’’

টেক্সাসের সভায় অংশ নিয়েছেন এমন অনেক মহিলা, গর্ভপাত না করাতে পেরে যাঁরা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। সেপসিস আক্রান্ত হয়ে মারাই যাচ্ছিলেন অন্ড্রিয়া কামিংস। কঠোর গর্ভপাত-বিরোধী আইনের জন্য ১৬ সপ্তাহের শিশুকে হারান তিনি। কমলার সভায় এসে বললেন, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আইন আমাকে মেরেই ফেলেছিল। কোনও মতে বেঁচে ফিরলেও সারা জীবন মনের এই দগদগে দাগটা আমাকে বয়ে বেড়াতে হবে।’’ সংবাদ সংস্থা

অন্য বিষয়গুলি:

Kamala Harris Beyonce america
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE