প্রতিশ্রুতি মতো হোয়াইট হাউসে ঢুকে বারাক ওবামার বিপরীত পথে হাঁটা শুরু করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওভাল অফিসে তাঁর দ্বিতীয় দিনেই সই করলেন ‘ওবামাকেয়ার’-এর প্রভাব কাটানোর নির্দেশে। এতে ট্রাম্প- বিরোধী বিক্ষোভের আঁচ বেড়েছে বই কমেনি। ট্রাম্পের শপথের পর থেকে বিক্ষোভ ও হিংসার জেরে গোটা দেশে গ্রেফতার হয়েছেন ২১৭ জন। মার্কিন ইতিহাসে এমন বিক্ষোভের নজির কমই আছে বলে মেনে নিচ্ছেন সে দেশের রাজনীতিকরা।
দেশের অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনতে ‘পেশেন্ট প্রটেকশন অ্যান্ড অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ এনেছিল ওবামা প্রশাসন। চলতি ভাষায় যা পরিচিত ‘ওবামাকেয়ার’ নামে। কিন্তু ওই পদক্ষেপে রাষ্ট্রীয় তহবিলের উপরে চাপ বেড়েছে বলে দাবি ট্রাম্প-সহ রিপাবলিকানদের।
ট্রাম্প এ দিন যে প্রশাসনিক নির্দেশে (এক্সিকিউটিভ অর্ডার) সই করেছেন তাতে সরকারি তহবিলের উপরে ‘ওবামাকেয়ার’-এর চাপ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। রাজনীতিকদের মতে, এতে ‘ওবামাকেয়ার’-এর অধীন বেশ কিছু ব্যবস্থা তথা পরিষেবা বাতিল করা যাবে। পুরো প্রকল্পটিকে বাতিল করতে নয়া কেন্দ্রীয় আইন তৈরির প্রক্রিয়া প্রয়োজন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক পদক্ষেপ করেছে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কংগ্রেস।
এক ডেমোক্রাট রাজনীতিকের কথায়, ‘‘ট্রাম্পের এই নির্দেশের প্রশাসনিক গুরুত্বের চেয়ে প্রতীকী গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, প্রথম দিন থেকেই ওবামার বিপরীত পথে হাঁটার বার্তা দিয়ে রাখলেন তিনি।’’
কেবল এই নির্দেশ নয়, বিতর্ক রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্য পদক্ষেপ নিয়েও। দ্বিতীয় দিনে প্রতিরক্ষা সচিব পদে জেমস ম্যাটিস ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের সচিব পদে জন এফ কেলির নাম অনুমোদন করেছে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেট। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পদে তাদের নিযুক্ত ব্যক্তিদের অনুমোদন পাওয়ার জন্য তাড়াহু়ড়ো করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ডেমোক্র্যাট সেনেটররা।
ট্রাম্পের পথের সঙ্গে যে দেশের বড় অংশের মানুষ একমত নন তার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই। এখন তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ট্রাম্পের উদ্বোধনী বক্তৃতার সময়ে বিক্ষোভ দেখাতে ওয়াশিংটনে এসেছিলেন বেশ কয়েক হাজার মানুষ। ‘ফ্যাসিস্ত-বিরোধী’ তকমা লাগানো পোশাক পরা এক দল বিক্ষোভকারী ট্রাম্পের বক্তৃতাস্থলের কয়েকটি ব্লক দূরেই বাসস্টপ আর দোকানপাট ভাঙচুর শুরু করেন। ভাঙা হয় একটি লিমুজিন গাড়ির কাচও। তাদের সামলাতে পেপার স্প্রে ছুড়তে হয় পুলিশকে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ছ’জন পুলিশও। গ্রেফতার করা হয়েছে ২১৭ জনকে।
বিক্ষোভের খবর এসেছে দেশের অন্য প্রান্ত থেকেও। নিউ ইয়র্ক, ডালাস, শিকাগোতেও গ্রেফতার হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। সিয়াটলে গুলিতে গুরুতর জখম এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভের এই শেষ নয়। এর পরে ট্রাম্প-বিরোধী ‘উইমেনস মার্চ’-এর ডাক দেওয়া হয়েছে ওয়াশিংটনে। ফলে আরও বড় মাপের বিরোধিতার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। মার্কিন মুলুকের বাইরে লন্ডন-সহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরেও পথে নামবেন মানুষ।
মার্কিন প্রশাসনের অবশ্য দাবি, হিংসার ঘটনা একেবারেই বিক্ষিপ্ত। বিক্ষোভকারীদের বড় অংশ শান্তিতেই কর্মসূচি পালন করেছেন।
ট্রাম্পের বক্তৃতার সঙ্গে ‘ব্যাটম্যান’ সিরিজের জনপ্রিয় খলনায়ক বেনের বক্তৃতার মিল খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। বিক্ষোভের বহর দেখে তাঁরা বলছেন, ‘‘আমেরিকার মানুষের বড় অংশের কাছে ট্রাম্প এখন খলনায়কই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy