টিকা তৈরির কাজ পুরো দমে চালাচ্ছে ফাইজার। ছবি—এএফপি।
বছর শেষ হওয়ার আগেই আমেরিকানদের জন্য বাজারে আসতে পারে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন। সম্প্রতি এ কথা জানাল মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজার ইনকর্পোরেশন। রবিবার সিবিএস-এর ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফাইজারের সিইও অ্যালবার্ট বৌরলা। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সংস্থার তৈরি করা টিকা ‘নিরাপদ’। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ছাড়পত্র পেলে ২০২১-এর আগেই বাজারে পাওয়া যাবে এই টিকা।
জার্মান সংস্থা বায়োএনটেক-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে করোনাভাইরাসের টিকা বানানোর কাজ চালাচ্ছে নিউ ইর্য়কের সংস্থা ফাইজার। টিকা তৈরির প্রতিযোগিতায় সামনের সারিতেই রয়েছে তারা। আমেরিকাতে মানুষের মধ্যে ফেজ-থ্রি ট্রায়ালও শুরু করা হয়েছে। টিকা তৈরির কাজও পুরো দমে চালাচ্ছে ফাইজার। রবিবারের সাক্ষাৎকারে বৌরলা বলেছেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেছি। বিপুল সংখ্যক ডোজও তৈরি হয়ে গিয়েছে। অপেক্ষা শুধু স্টাডির রিপোর্ট ইতিবাচক হওয়ার। তা এলেই এই টিকা আমরা বাজারে ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।’’
ওই সংস্থা জানিয়েছে, অক্টোবরের মধ্যেই জানা যাবে এই টিকা কতটা কার্যকর। ফাইজার কর্তার আশা, অক্টোবরে এই টিকার কার্যকরিতা ৬০ শতাংশ জানার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই ওযুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মনে করছে, অক্টোবরের মধ্যে টিকা সংক্রান্ত যে পরিমাণ তথ্য তাদের হাতে আসবে তা দিয়ে কার্যকরিতার ব্যাপারটি বোঝা সম্ভব হবে। সে জন্য টিকার সফলতার ব্যাপারে বৌরলার সাবধানী মন্তব্য, ‘‘এটা যে কাজ করবেই, তা বলছি না। তবে যদি সফলভাবে কাজ করে আমরা তা জানাব।’’ তবে অক্টোবরের পরও ফেজ-থ্রি ট্রায়াল চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ফাইজারের করোনা টিকার ট্রায়াল চালানো হবে। শনিবার এক বিবৃতিতে ওই মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই সপ্তাহে ট্রায়ালের জন্য ৩০ হাজার রোগীকে ইতিমধ্যেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আরও ১৪ হাজার জনকে তালিকাভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রার কথাও জানিয়েছে তারা। কিশোর থেকে বৃদ্ধ— বিভিন্ন বয়সের রোগীর মধ্যে চালানো হবে ট্রায়াল। সেই তালিকায় থাকবেন বিভিন্ন জনজাতির মানুষও। এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সি রোগে আক্রান্তদের মধ্যেও ট্রায়ালের কথা জানানো হয়েছে ফাইজারে তরফে।
আরও পড়ুন: কমেও রক্ষা নেই কোভিডে, ইউরোপে দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউ
করোনাভাইরাসের টিকাকে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা শনিবার জানানো হয় আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তরফে। সে জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা খুব শীঘ্র প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়। এই ঘটনার এক দিন পরেই এল ফাইজার কর্তার ঘোষণা। সপ্তাহখানেক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে করোনা টিকা বাজারে আনার কথা। তা হলে কি ভ্যাকসিন আনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপও কাজ করছে? এই বিষয়টি অবশ্য সরাসরি নাচক করেছেন বৌরলা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ফাইজারকে রাজনীতির বাইরে রাখতে চাই।’’ কিন্তু তা সত্ত্বেও এই টিকা কতটা ‘নিরাপদ’ হবে সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: ফের ট্রায়াল চালু করল অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্র্যাজেনেকা
ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন ‘চ্যাডক্স ১’ তৈরি করছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কিন্তু এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই ট্রায়াল ফের চালু করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সিইও পাস্কাল সরিয়ট বলেন, ‘‘এখনও আশা করছি, চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুর দিকে আমরা টিকা আনতে পারব।’’ যদিও ভাইরাস আনার ইঁদুর দৌড়ের মধ্যেই আশঙ্কার মেঘ দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতিটি দেশকেই তারা বার বার অনুরোধ করেছে, ‘‘টিকা নিয়ে অযথা তাড়াহুড়ো করে মানুষের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy