বিতর্কের মুখে ড্য়ামেজ কন্ট্রোলে ট্রাম্প প্রশাসন। ছবি: এএফপি
কাশ্মীর নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেফাঁস মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। সেই ক্ষোভ প্রশমন করতেই এ বার ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হল ট্রাম্প প্রশাসনকে। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা টুইটে লিখেছেন, ‘কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। দু’পক্ষ আলোচনার মাধ্যমেই তা স্থির করবে।’ ট্রাম্পের ‘অস্বস্তিকর’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের এক ডেমোক্র্যাট সদস্য। কিন্তু, কাশ্মীর নিয়ে সেই পুরোন রেকর্ডই বাজাচ্ছে পাকিস্তান। তৃতীয় পক্ষ ছাড়া কখনই সমাধান মিলবে না বলে দাবি করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
বিতর্কের সূত্রপাত সোমবার। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে নিয়ে কাশ্মীর-মধ্যস্থতার কথা তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের দাবি, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন নরেন্দ্র মোদী। তা শুনে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ট্রাম্পের এই দাবিতে পাকিস্তান খুশি হলেও, তা নিয়ে দিল্লিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি নস্যাৎ করে নয়াদিল্লি জানায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন কোনও অনুরোধ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক স্তরেই আলোচনা হবে, এটাই আমরা ধারাবাহিক ভাবে বলে এসেছি।’’ ভারতের বয়ানের পরেই কার্যত পাশা উল্টে যায়। বিষয়টি কোথায় ধাক্কা মেরেছে তা আন্দাজ করেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে ট্রাম্প প্রশাসন।
বিদেশমন্ত্রকের এক কর্তা টুইট করেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের কাছেই কাশ্মীরএকটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়। উভয়পক্ষ যদি এ নিয়ে আলোচনা করে তা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বাগত জানাবে। দু’পক্ষকে সাহায্যও করবে।’ টুইটের শেষে লেখা রয়েছে এজিডব্লিউ। মনে করা হচ্ছে, এজিডব্লিউ আসলে বিদেশমন্ত্রকের দক্ষিণ-মধ্য এশিয়া বিভাগের সহ-সচিব অ্যালিস ওয়েলস। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ট্রাম্প ও ইমরানের বৈঠক নিয়ে হোয়াইট হাউসের তরফে যে নথি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কোথাও কাশ্মীরের উল্লেখ নেই। তবে জাপানে জি-২০ সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের এমন কোনও কথা হয়েছিল কি না তাও স্পষ্ট করেনি ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: মধ্যস্থতা বিতর্কে সংসদে তোলপাড়, বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্যে তুষ্ট নয় বিরোধীরা, মোদীর বিবৃতি দাবি
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে সে দেশেও। মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য ব্র্যাডলি জেমন শেরম্যান টুইটে বলেন, ‘‘প্রত্যেকেই জানেন, কাশ্মীর নিয়ে কখনই তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি মেনে নেয়নি ভারত। ট্রাম্পের এই মন্তব্য অপেশাদার ও বিভ্রান্তিকর। আমি এ জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রীঙ্গলার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: যাঁর নামে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’, সেই বিজ্ঞানতপস্বীর মৃত্যু এখনও রহস্যাবৃত
এর আগে ২০১৭ সালেই কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দেন রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালে। দু’পক্ষ চাইলে কাশ্মীর বিবাদ মেটাতে প্রস্তাব দেয় ইরানও। ২০১৭ সালে চিন জানায়, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নতির জন্য তারা গঠনমূলক ভূমিকা নেবে। এমনকি চলতি বছরে সেই একই বার্তা দিয়েছে মস্কোও। কিন্তু, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি ও লাহৌর ঘোষণাপত্রেই স্পষ্ট, কাশ্মীর দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে আঁচ করেই এ বার ভারসাম্য রক্ষার কৌশল নিয়েছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: অসমে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের সময়সীমা এক মাস বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট, ২০ শতাংশ নথি যাচাইয়ের আর্জি খারিজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy