Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্রপুঞ্জের কী অবস্থান, জানতে চায় আমেরিকা

এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছ থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করছেন ওই কর্তা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। 

রিয়াধে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ দেখাচ্ছে সৌদি সেনা। বুধবার। এপি

রিয়াধে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ দেখাচ্ছে সৌদি সেনা। বুধবার। এপি

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৬
Share: Save:

গত সপ্তাহে সৌদি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অবস্থান জানতে চেয়ে সওয়াল করলেন মার্কিন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ এক কর্তা। ওই হামলার ঘটনার দায় ইরানের উপরে চাপিয়েছে আমেরিকা। যা মানতে নারাজ ইরান। এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছ থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করছেন ওই কর্তা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্তা বলেছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সৌদিতে হামলা হয়েছে। তাই ওরা নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানাতেই পারে। কিন্তু কোন কোন তথ্য প্রথমে প্রকাশ করা সম্ভব, সেটা আমাদের দেখতে হবে।’’ ‘কোন তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব’ বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন, সেটাও বিশদে কিছু বলেননি ওই কর্তা। তবে নিরাপত্তা পরিষদে নিজেদের অবস্থান জোরদার করতে এর আগেও আমেরিকা গোপন তথ্য প্রকাশ করেছে।

আমেরিকার দৃঢ় বিশ্বাস, সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আরামকো-র তেলের খনি এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার আবকাইক এবং অন্য কেন্দ্র খুরাইসে হামলার পরিকল্পনা দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানে বসে হয়েছিল। তবে ইরান সে দাবি উড়িয়ে গত সোমবারই কূটনৈতিক বার্তায় আমেরিকাকে জানিয়েছে, সৌদি তেল শোধনাগারের হামলার দায় তাদের উপরে চাপালে ইরানও সেইমতোই পাল্টা জবাব দেবে। ওই বার্তায় ট্রাম্প এবং তাঁর বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর দাবির নিন্দা করছে ইরান। যদিও আজই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ইরানের উপরে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর প্রশাসনকে। পম্পেয়ো আজ ফের বলেছেন ‘‘ইরানের এই হামলা যুদ্ধের শামিল।’’ তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি আজ বলেছেন, সৌদি তেল শোধনাগারে ইয়েমেনিরা হামলা চালিয়েছে মার্কিন সমর্থিত সৌদি জোট বাহিনীকে বার্তা দিতেই। ইয়েমেনে হুথি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে ওই জোট দীর্ঘ দিন হামলা চালিয়ে আসছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন তাই এই হামলার মাধ্যমে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলে দাবি রৌহানির। তাঁর কথায়, ‘‘ইয়েমেনিরা হাসপাতালে হামলা চালায়নি। স্কুলেও চালায়নি। সানার কোনও বাজারেও এ ঘটনা ঘটেনি। ওরা শিল্পাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে... শুধু হুঁশিয়ারি দিতেই।’’ এর পরেই নাম না করে সৌদি শাসকদের দিকে রৌহানির ইঙ্গিত, ‘‘এই সব হুঁশিয়ারি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ভেবে দেখুন, এর পরে যুদ্ধ লেগে যেতেই পারে।’’ ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি জঙ্গিরা সৌদি আরবে তেল শোধনাগারের হামলার দায় নিলেও আমেরিকা সরাসরি ইরানের দিকেই আঙুল তুলেছে।

তবে ইরানের উপরে হামলার দায় চাপিয়ে আমেরিকা নিরাপত্তা পরিষদে নিজেদের অবস্থান কতটা জোরদার করতে পারবে, তা নিয়ে তাই সন্দেহ আছে বিশেষজ্ঞদের। কারণ রাশিয়া এবং চিন স্বাভাবিক ভাবে বরাবরের বন্ধু ইরানের পাশে দাঁড়াবে। রুশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সৌদি-হামলা নিয়ে দুম করে কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সব দিক দেখে নিরাপত্তা পরিষদ ওই হামলার নিন্দায় বড়জোর একটা বিবৃতি দিতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও সাধারণ সভায় ঐকমত্য থাকতে হবে।

এর মধ্যে সৌদির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সৌদি রাজা মহম্মদ বিন সলমনকে ফোন করে ইমরান বলেছেন, কোনও জঙ্গি হামলা ঘটলে বা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে রিয়াধের পাশে থাকবে ইসলামাবাদ। আগামিকালই ইমরানের সৌদি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য সে দেশে যাওয়ার কথা, জানিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি।

অন্য বিষয়গুলি:

US UN Saudia Arabia Oil Attack Iran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy