স্রেফ বিমানহানা চালিয়ে কোবানি শহর থেকে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের নিকেশ করা অসম্ভব, বুধবার এ কথা মেনে নিল পেন্টাগনও। এর আগে সিরিয়ার এই সীমান্ত শহরের বাসিন্দারা ও নিরাপত্তাবাহিনী একাধিক বার দাবি করেছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট এ বার ইরাক ও সিরিয়ায় পুরোদস্তুর আক্রমণ করুক। কিন্তু এ পর্যন্ত তাতে কান দেয়নি কোনও দেশই। ফল? এক পর্যবেক্ষক সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, কোবানির এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল এখন জঙ্গিদের দখলে।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মতান্তর রয়েছে। কারও কারও দাবি, দু’একটা বিক্ষিপ্ত বহুতল দখল করে নিজেদের কালো পতাকা তুললেও বেশির ভাগ এলাকাতেই এখন নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই চালাচ্ছে আইএস। বিস্ফোরণের ইতস্তত বিকট শব্দ ও কালো ধোঁয়া, কখনও বা গুলির লড়াই। এর মাঝেই দিন কাটছে কোবানির বাসিন্দাদের। তবে লাগাতার জঙ্গি-হামলার মুখে তাঁদের অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন লাগোয়া তুরস্কে। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থার দাবি, কোবানিতে বসবাসকারীর সংখ্যা এখন মেরেকেটে কয়েকশো। আইএস যে ভাবে হত্যালীলা চালাচ্ছে, তা না থামালে খুব শীঘ্রই জনশূন্য হয়ে পড়বে এই শহর। সম্ভবত তাই তুরস্ক ও মার্কিন জোটভুক্ত দেশগুলির কাছে বার বারই সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন কোবানির নিরাপত্তাবাহিনী। অস্ত্র, প্রশিক্ষণ কিংবা সংখ্যা সব দিক থেকেই আইএস যে তাঁদের থেকে অনেক এগিয়ে, সে কথা বুঝে গিয়েছে কোবানির কুর্দ নিরাপত্তাবাহিনী।
একই মত পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বিরও। তাঁর বয়ানে, “কোবানিতে আইএসকে থামাতে আমরা সব রকম চেষ্টা করছি। কিন্তু শুধু বিমানহানায় কিছুই হবে না।” কোবানির বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, এ দিন আমেরিকা যে ক’বার হামলা চালিয়েছে তাতে আইএসের সামান্যই ক্ষতি হয়েছে। তবে ওবামা-প্রশাসনের পাল্টা যুক্তি, কোবানি নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। ইরাকে আইএস-নিধনই এখন মূল লক্ষ্য তাদের। এক বার তা হয়ে গেলে সিরিয়ার দিকে নজর দেওয়া সহজ হবে। কিন্তু তত দিন কোবানির কী হবে? আমেরিকা তো বটেই, তুরস্কও তাদের জন্য কিছু করছে না। সীমান্তে তুরস্কের সাঁজোয়া গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। আক্রমণ করছে না।
এ সবের মাঝে শক্তি বাড়িয়েই চলেছে আইএস। শোনা যাচ্ছে, সাংবাদিকদের জন্য নির্দেশের নয়া তালিকাও জারি করেছে তারা। তাতে লেখা প্রতিটি নিয়মের একটাই উদ্দেশ্য, সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এ জন্য বিশেষ সংবাদমাধ্যম দফতরও তৈরি করেছে আইএস। বলা হয়েছে, তাদের রাজত্বে থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারবেন না সাংবাদিকরা। কিন্তু খবর প্রকাশের আগে ওই দফতরের অনুমতি নিতে হবে। তা বাদে নিষিদ্ধ খবরের চ্যানেল এবং বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না।
এ সব দেখেও অবশ্য হাল ছাড়ছেন না অপহৃত মার্কিন নাগরিক আব্দুল-রহমান কাসিগের মা। আইএস নেতা আবু বকর অল বাগদাদির উদ্দেশে একটি টুইট করেছেন তিনি। তাঁর অনুরোধ, “আমি বৃদ্ধা। আব্দুল আমার একমাত্র সন্তান। আমি আর আমার স্বামী শুধুমাত্র ওঁর ভরসাতেই বেঁচে রয়েছি।” সেই ছেলেকে ফিরে পেতে আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান বৃদ্ধা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy