খারকিভ থেকে বিশেষ ট্রেনে উদ্ধার করা সেই শিশুরা। ছবি: রয়টার্স।
দু’সপ্তাহ আগেও ‘ইউক্রেনের সেরা চিকিৎসার শহর’ হিসেবে পরিচিত ছিল খারকিভ। রুশ বাহিনীর ১০ দিনের ধারাবাহিক হানায় সেই শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘন বসতিপূর্ণ অসামরিক এলাকায় নির্বিচারে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্লাস্টার বোমা বর্ষণে হতাহত হয়েছেন অনেকেই। সেই তালিকায় রয়েছে শিশুরাও। তা ছাড়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্যাহত হয়ে পড়েছিল দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসাও।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে খারকিভের সেই আহত এবং কঠিন রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হল শুক্রবার রাতে। বিশেষ মেডিক্যাল ট্রেনে ১২ জন শিশু এবং তাঁদের অভিভাবকদের আসা হল পোল্যান্ড সীমান্তে। এই উদ্দেশ্যে রাতারাতি একটি সাধারণ ট্রেনে আপৎকালীন চিকিৎসার কিছু বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। যাত্রী হিসেবে ছিলেন খারকিভের বিশিষ্ট শিশুচিকিৎসক ইউজেনিয়া সুজকিউইচ-সহ কয়েক জন ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মী। ইউক্রেন সরকার সূত্রের খবর, ওই শিশুদের চিকিৎসার জন্য পোল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিস্তরের শান্তি বৈঠকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া অসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে শুরু হয়ে অসুস্থ এবং আহত শিশুদের খারকিভ থেকে সরানোর উদ্যোগ। শিশুচিকিৎসক ইউজেনিয়ার তত্ত্বাবধানেই খারকিভের কয়েক জন চিকিৎসক ইউক্রেন সরকার এবং আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই শিশুদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।
পোল্যান্ডগামী ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে ছিল ছ’বছরের ভিক্টোরিয়া। তা মা ইরা বলেন, ‘‘ছোট থেকেই আমার মেয়ে সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত। নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু যুদ্ধের আবহে তা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই শিশুচিকিৎসক ইউজেনিয়ার মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলাম।’’ ইরা জানান, প্রথমে তাঁদের খারকিভের অদূরে লভিভ শহরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখান থেকেই তাঁরা বিশেষ মেডিক্যাল ট্রেনের সওয়ারি হওয়ার অনুমতি পান।
ইউজেনিয়া জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে খারকিভ শহরে আরও অন্তত ২০০ জন শিশুর চিকিৎসা প্রয়োজন। ধাপে ধাপে তাঁদের চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁদের অগ্রাধিকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy