রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে শান্তি সমঝোতার মাঝে কোনও শর্ত চাপানো চলবে না। শান্তি আলোচনার পথ হতে হবে নিঃশর্ত। শনিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় এই বার্তাই দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। অন্যথায়, মস্কো যে ভাষা বোঝে, সেই ভাষাতেই বোঝানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। নিঃশর্ত শান্তি আলোচনার কথা বলে জ়েলেনস্কি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “রাশিয়া যদি তাতে সম্মত না হয়, তবে তারা (রাশিয়া) রাজি না হওয়া পর্যন্ত প্রবল ভাবে চাপ দিয়ে যেতে হবে। মস্কো কেবল একটিই ভাষা বোঝে।”
সৌদি আরবে সম্প্রতি আমেরিকা এবং ইউক্রেনের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে ইউক্রেনকে ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা। তাতে রাজিও হয়েছেন জ়েলেনস্কিরা। কিন্তু রাশিয়ার তরফে এখনও পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে বসা নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর চাপ বৃদ্ধি করেছে আমেরিকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিও যুদ্ধবিরতির জন্য চাপে রাখছে রাশিয়াকে। এই অবস্থায় রাশিয়ার উপর আরও চাপ বৃদ্ধি করলেন জ়েলেনস্কি। তাঁর দাবি, রাশিয়ার জন্যই যুদ্ধবিরতিতে দেরি হচ্ছে। জ়েলেনস্কি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “এত দিনে যুদ্ধবিরতি হয়ে যেত। কিন্তু রাশিয়া সেটিকে আটকানোর জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
এক দিকে যখন আমেরিকা উদ্যোগী হয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে, যখন শান্তি আলোচনার চেষ্টা চলছে, মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছে, তখনও রুশ বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। বৃহস্পতিবারই ক্রেমলিন দাবি করে, তারা কুর্স্ক শহর পুনর্দখল করে নিয়েছে। তার পর থেকেই ইউক্রেন বাহিনীকে আত্মসমর্পণের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। পুতিন জানিয়েছেন, ট্রাম্পের দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে তিনি আলোচনায় আগ্রহী। কিন্তু কুর্স্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। এখনও পর্যন্ত জ়েলেনস্কি তাতে নারাজ। এই চাপা উত্তেজনার মাঝেই ফের রাশিয়ার উপর চাপ বৃদ্ধি করলেন জ়েলেনস্কি।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পুতিনের নীতিতে খুশি নয় ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক দেশ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চুক্তি নিয়ে ছেলেখেলা করছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না। পুতিন বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ক্রেমলিন আসলে শান্তি চায় না। তাই পুতিন যুদ্ধবিরতি পিছিয়ে দিতে চাইছেন।’’ পুতিনের নীতি নিয়ে এর আগে ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশ অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল। আমেরিকায় জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বাদানুবাদের পর ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ইউক্রেনের পাশেই দাঁড়িয়েছিল। ব্রিটেন, ফ্রান্স ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। ইউক্রেনে সেনা পাঠাতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে এই দুই দেশ।