আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে গত তিন বছর ধরে যে যুদ্ধ চলছে, তা ২৪ ঘণ্টায় বন্ধ করে দেবেন তিনি। দু’টি ফোন করলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁর প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর ৫৪ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে কোনও সমঝোতা হয়নি। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প মেনে নিয়েছেন, প্রচারের সময়ে এ বিষয়ে তিনি ঠাট্টা করেছিলেন। যদিও শীঘ্রই যুদ্ধ বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমি যখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের কথা বলেছিলাম, ঠাট্টা করছিলাম। আসলে আমি বলতে চেয়েছিলাম, আমি এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই এবং আমার মনে হয় আমি সফল হব।’’
ভোটের প্রচারে একাধিক অতিরঞ্জিত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। বিরোধীরা আগেও তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে এই ধরনের স্বীকারোক্তি বেশ বিরল। আমেরিকার একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প। রবিবার তা প্রকাশিত হবে। তার আগে শুক্রবার ওই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছে, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে প্রচারে ঠাট্টা করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
গত বছর সেপ্টেম্বরে আমেরিকার তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বিতর্কসভায় রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘রাশিয়ানরা মরছেন। ইউক্রেনীয়রা মরছেন। আমি চাই, এই মৃত্যু বন্ধ হোক। আর আমি সেটা করে দেখাবই। আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধ বন্ধ করে দেব।’’
ট্রাম্প আরও বলেছিলেন, ‘‘যে যুদ্ধ চলছে, তা এখনই বন্ধ হওয়া দরকার। আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই এই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারি। আমি যদি ভোটে জিতি, প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার আগেই আমি দু’টি ফোন করব। এক জনের সঙ্গে কথা বলব। অপর জনের সঙ্গে কথা বলব। দু’জনকে মিলিয়ে দেব।’’ ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে ভোটের প্রচারে হাতিয়ার করেছিলেন রিপাবলিকানেরা। কিন্তু এখনও পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ থামেনি।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে স্টিভ উইটকফ মস্কোয় গিয়ে এ বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করে এসেছেন। কিন্তু এখনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, পুতিন শান্তি স্থাপনে রাজি না-হলে তিনি কী করবেন। ট্রাম্প বলেন, ‘‘সেটা খুবই খারাপ হবে। এত মানুষ রোজ মারা যাচ্ছেন। আমার মনে হয় পুতিন রাজি হবেন। আমি ওঁকে ভাল করে চিনি। মনে হয় উনি রাজি হবেন।’’