ফেরা: মেক্সিকো উপসাগরে নামার পরে জাহাজে তোলা হচ্ছে মহাকাশ থেকে ফেরা মার্কিন ক্যাপসুলটিকে। সেই ছবি প্রকাশ করল নাসা। রবিবার।
ঝড়জলের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার ক্যাপসুলে উঠেছিলেন দুই মার্কিন নভশ্চর। যদিও প্রকৃতি বিরূপ হয়নি। রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৫৫ মিনিট নাগাদ চারটি প্যারাসুটে ভর করে নির্বিঘ্নেই মেক্সিকো উপসাগরে নেমে এল স্পেসএক্স সংস্থার সেই ক্যাপসুল। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারের কন্ট্রোলরুম তখন হাততালিতে ফেটে পড়ছে। চারপাশ থেকে ছুটে আসছে স্পিডবোট। একটু পরেই জাহাজে তুলে নেওয়া হল সেই ক্যাপসুলকে।
চার মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ কাটিয়ে পৃথিবীতে ফিরলেন ডগলাস হার্লি এবং বব বেনকেন। ৪৫ বছর পরে এই প্রথম সমুদ্রে নামল মার্কিন মহাকাশ-ক্যাপসুল। গত কাল পর্যন্ত দুই নভশ্চরের ফেরা ঘিরে অনিশ্চয়তা ছিল। কারণ, বাহামার দিক থেকে ধেয়ে আসছে ঝড় ‘ইসাইয়াস’। অশান্ত হচ্ছে সমুদ্র। অথচ ফ্লরিডা উপকূলের কাছে সমুদ্রেই নামার কথা ‘স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন’ স্পেসক্রাফ্টের। খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে নভশ্চরেরা কী ভাবে সমুদ্রে নামবেন, কী ভাবে তাঁদের নিরাপদে উদ্ধার করা হবে, সব নিয়েই চিন্তায় ছিল নাসা। এক বার এ-ও শোনা গিয়েছিল, ফেরার ‘টিকিট’ বাতিল করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দু’দিন বাদে ফিরবেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেশ আর তা করা হয়নি। মার্কিন সময় অনুযায়ী, আজ ভোরে রওনা দেয় যানটি।
মহাকাশ স্টেশনে দুই নভশ্চরের সম্মানে ‘ফেয়ারওয়েল’ অনুষ্ঠান হয়। ‘নাসা টিভি’-তে দেখানো হয় সেই অনুষ্ঠান। হার্লি বলেন, ‘‘আর একটু পরেই যানে উঠব, তার পর অবতরণ ও জলে ঝাঁপ।’’ আরও বলেন, ‘‘দলের সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। বিশেষ করে আবহাওয়ার যা গতিপ্রকৃতি।’’ বেনকেনের কথায়, ‘‘অভিযানের সবচেয়ে কঠিন ধাপ উৎক্ষেপণ। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ নভশ্চরদের নিরাপদে ঘরে ফেরানো।’’ নাসা টিভিতে দেখা যায়, বেনকেনের হাতে একটি খেলনা ডায়নোসর। বাবার সঙ্গে প্রিয় খেলনাটিকে মহাকাশে পাঠিয়েছিল বাচ্চারা। বেনকেন তাঁর ও সঙ্গীর ছেলেমেয়েদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ট্রেমর, দ্য অ্যাপাটোসরাস এ বার বাড়ি ফিরছে। বাবার সঙ্গেই ফিরছে।’’
গত ৩০ মে মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দিয়েছিল স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন। ২০১১-এর পরে এই প্রথম আমেরিকার মাটি থেকে মহাকাশে রওনা দেওয়া। অভিযানের আর একটি বিশেষত্ব ছিল, প্রথম বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে মহাকাশ পাড়ি। তবে আসল লক্ষ্য ছিল, রাশিয়ার উপর থেকে নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা। ‘স্পেস শাটল’-গুলির মেয়াদ ফুরনোর পর থেকে মহাকাশে মানুষ পাঠাতে হলে রাশিয়ার সয়ুজ মহাকাশযানের উপরে নির্ভর করতে হত নাসাকে। কিন্তু তা ব্যবহারের জন্য আসন-পিছু ৮ কোটি ডলার দিতে হত আমেরিকাকে। এর জন্য দীর্ঘদিন তারা নতুন স্পেসক্রাফ্ট তৈরির চেষ্টা ছিল। ‘স্পেসট্যাক্সি’ তৈরিতে স্পেসএক্স এবং উড়ান সংস্থা বোয়িংকে ৭০০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য দিয়েছিল মার্কিন সরকার। গত বছর ব্যর্থ হয় বোয়িংয়ের প্রচেষ্টা। আশা-ভরসা ছিল স্পেসএক্স। বেনকেনদের নিরাপদে ঘরে ফেরা সেই সাফল্যের খবরও নিয়ে এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy