ফাইল চিত্র।
‘ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত প্রযুক্তি খুঁতে ভরা। তাই আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুর্নীতি অনিবার্য!’— এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশের সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কোর্ট (টিএসই)-এর তোপের মুখে পড়লেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো। সোমবার বোলসোনারোর বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তারা। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের নির্বাচনী পদ্ধতির বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য অপরাধমূলক হয়ে দাঁড়ায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছে টিএসই।
একেই রাষ্ট্রনেতা বেছে নেওয়ার মতো গুরুতর বিষয়, তার উপর দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গলদের ইঙ্গিত দিয়ে দেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাটাকেই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করানো— সব মিলিয়ে বিষয়টি বড়সড় বিতর্কের সৃষ্টি করেছে দেশ জুড়ে।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা অবশ্য এ ক্ষেত্রে বোলসোনারোর মধ্যে প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছায়া দেখছেন! তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, এর আগে কোনও রাষ্ট্রনেতার মুখে এ ধরনের অভিযোগ শোনা যায়নি ব্রাজিলে। সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসে নির্বাচনী-প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির আশঙ্কা নিয়ে বোলসোনারোর হঠাৎ সুর চড়ানো আদতে নির্বাচনে হার মেনে না-নেওয়ার কোনও ফন্দি নয় তো? তাঁরা মনে করাচ্ছেন, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ট্রাম্পও কিন্তু অনেকটা এই পথেই হেঁটেছিলেন!
একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে এমনিতেই দিন দিন বোলসোনারো বিরোধী সুর চড়া হচ্ছে ব্রাজিলে। ফলে ২০২২-এর নির্বাচনে যে তাঁর পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত তা বেশ বুঝতে পারছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট, মত বিশেষজ্ঞদের।
তা সত্ত্বেও দ্বিতীর বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে তাঁর উৎসাহে কোনও ঘাটতি নেই। সম্প্রতি বোলসোনারো আবার অভিযোগ তোলেন, প্রাক্তন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট লুইজ় ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা-কে পদে ফেরাতে নাকি হাত মিলিয়েছেন সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কোর্টের সদস্যরা।
বোলসোনারোর এই অভিযোগের পর আর দেরি করেনি টিএসই। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে শুরু হয় ভোটাভুটি। রায় গিয়েছে তদন্তের পক্ষেই। সোমবার ঘোষণা করা হয়েছে সেই সিদ্ধান্ত।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি এড়াতে বেশ অনেক দিন ধরেই প্রিন্ট করা রসিদ চালুর পক্ষে সওয়াল করে আসছেন বোলসোনারো। যাতে বৈদুতিক ভোটযন্ত্রের উপর সন্দেহ হলে এই কাগজগুলির ভিত্তিতে গণনা করা যায়। বোলসোনারো জানিয়েছেন, যদি এই ব্যবস্থা অবলম্বন না করা হয়, তা হলে তিনি এই নির্বাচনের ফলাফল মানবেনই না। এই দাবি নিয়ে দেশের একাধিক শহরে জমায়েতও করতে দেখা গিয়েছে বোলসোনারো সমর্থকদের।
যদিও এই পথে হাঁটার কোনও যুক্তিই দেখছেন না ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান এবং প্রাক্তন মিলিয়ে গঠিত ১৮জন বিচারপতির একটি দল। তাঁদের দাবি, ১৯৯৬ সালে বৈদুতিক ভোটযন্ত্রের ব্যবহার শুরুর পর থেকে ব্রাজিলে নির্বাচনে জালিয়াতির প্রসঙ্গে কোনও নথি বা নজির নেই। তা ছাড়া, নির্বাচনের আগে ও পরে তো বটেই, নির্বাচন চলাকালীনও ভোটযন্ত্রের অডিট করা হয়। যার সাক্ষী থাকে পুলিশ, রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধি, ব্রাজিলের বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা-সহ আরও অনেকে।
তাঁদের আশঙ্কা, বোলসোনারোর কথা মতো কাগজের ব্যালটে ফিরে গেলেই বরং দুর্নীতির আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পাবে।প্রসঙ্গত, বোলসোনারোর ব্যালটে ফেরার প্রস্তাব গৃহীত হবে কি না, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোট দেবেন ব্রাজিলের কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy