Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Donal Trump

বাঙ্কারে ট্রাম্প! ‘ভয়’ দেখাচ্ছে আমেরিকার বিক্ষুব্ধ জনতা

আজ জানা গেল, কৃষ্ণাঙ্গ যুবক খুনের ঘটনায় শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ শুরু হতেই ট্রাম্পকে সরানো হয়েছিল বাঙ্কারে।

করোনার চেয়েও দ্রুত ছড়াচ্ছে প্রতিবাদের আগুন।

করোনার চেয়েও দ্রুত ছড়াচ্ছে প্রতিবাদের আগুন।

সংবাদ সংস্থা 
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০৩:৫০
Share: Save:

হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবারের টুইটে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, বিক্ষোভ ‘ঠান্ডা’ করতে হোয়াইট হাউসে এমন সব অস্ত্র মজুত, যা নাকি অনেকে চোখেই দেখেনি! গত কাল ওয়াশিংটনের কৃষ্ণাঙ্গী মেয়র বলেছিলেন, ‘‘হিংস্র কুকুর, ভয়ঙ্কর অস্ত্র কিছুই ছিল না। হোয়াইট হাউসে সে দিন শুধু এক ভীতু মানুষ ঘাপটি মেরে বসেছিলেন।’’

আজ জানা গেল, কৃষ্ণাঙ্গ যুবক খুনের ঘটনায় শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ শুরু হতেই ট্রাম্পকে সরানো হয়েছিল বাঙ্কারে। মাটির নীচে! নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল হোয়াইট হাউসের সব আলো। ঘণ্টাখানেক পরে প্রেসিডেন্ট যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসেন, তত ক্ষণে পুলিশ ও সিক্রেট সার্ভিস কোনও ক্রমে আটকে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতাকে। ফলে ‘লুকিয়ে পড়বেন না মিস্টার প্রেসিডেন্ট’— সুযোগ পেয়ে আজ এই বলে কটাক্ষ করেছে চিন।

প্রতিবাদের আগুনও নেভেনি। কার্যত করোনার চেয়েও দ্রুত ছড়াচ্ছে রাগ! রাস্তায় রাস্তায় ফের স্লোগান ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’, ‘দম আটকে আসছে আমার!’ মিনিয়াপোলিসের যে-রাস্তায় জর্জ ফ্লয়েডের ঘাড়ের উপর হাঁটু চেপে ধরে মেরেই ফেলেছিলেন শ্বেতাঙ্গ অফিসার ডেরেক শভিন, আজ সেখানে যান আগামী ভোটে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন। স্থানীয় বেশ কয়েকটি কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘অসম্ভব বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। কিন্তু যন্ত্রণা যেন দেশটাকে না শেষ করে দেয়!’’

আরও পড়ুন: প্রথমবার বেসরকারি উদ্যোগে মহাকাশে দুই নভশ্চর, সঙ্গে গেল এক ডাইনোসর

এমনিতেই করোনায় বিপর্যস্ত আমেরিকায়। সংক্রমিত এবং মৃত্যুর নিরিখে তালিকার শীর্ষে। তার উপর বিষফোঁড়ার মতো এই বিক্ষোভ। মায়ামি, কানসাস সিটি, সান ফ্রান্সিসকো, নিউ ইয়র্ক, হিউস্টন, ওয়াশিংটনের মতো প্রায় সব বড় শহরে কাল ছিল প্রতিবাদের ষষ্ঠ দিন। রাস্তায় রাস্তায় সেনা, বেশির ভাগ শহরেই কার্ফু। তবু পথে নেমে ভাঙচুর, লুটপাট এমনকি পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়াল জনতা। জবাবে চলল দেদার ধরপাকড়, ধাক্কাধাক্কি, লাঠিচার্জ, ঘোড়সওয়ার পুলিশের লাথি, চলন্ত পুলিশ ভ্যান খেকে কাঁদানে গ্যাস, লঙ্কাগুঁড়ো। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার প্রায় চার হাজার। মিনিয়াপোলিসে গাড়ি বোঝাই করে প্রতিবাদীদের নিয়ে ব্রিজ পেরোনোর সময় এক ট্রাকচালককেও আটক করেছে পুলিশ।

‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের মামলায় ধৃত পুলিশের উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে তবু নাছোড় সাদা-কালোর মিছিল। পরিস্থিতির সামাল দিতে অন্তত আটটি প্রদেশে নেমেছে ‘ন্যাশনাল গার্ড’। শুধু ওয়াশিংটনেই মোতায়েন প্রায় দু’হাজার সেনা। কাল তবু এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের একাংশ চলে আসেন হোয়াইট হাউসের খুব কাছের একটি পার্কে। ফের এক দফা ভাঙচুর চলে। সূত্রের খবর, শুক্রবারের মতোই কালকের এই ঘটনাতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে হোয়াইট হাউসের অন্দরে।

ট্রাম্পের দাবি, ফ্যাসিবাদ-বিরোধী তথা চরম বামপন্থী গোষ্ঠী ‘অ্যান্টিফা’ই অশান্তিতে উস্কানি দিচ্ছে। সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার-ও। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েনও ‘বহিরাগত জঙ্গিদের’ দিকে আঙুল তুলছেন। সেন্ট পল শহরের মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে বছর একত্রিশের তরুণী মুনা আব্দি কিন্তু বললেন, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কালো, মায়েরা কালো, বন্ধুরাও। সবাইকে তো আর পড়ে-পড়ে মার খেতে দেখতে পারিনা! এই প্রজন্ম আর অন্যায় মেনে নেবে না।’’ আহত, চোখ-খোয়ানো, ধৃত সাংবাদিকেরাও মাঠ ছাড়তে চাইছেন না। তাঁরাও বলছেন, শেষ দেখেই ছাড়ব। মায়ামি পুলিশের একাংশ হাঁটু গেড়ে বসে জনতার কাছে ক্ষমা চাইছেন, সামনে এসেছে সেই ভিডিয়োও।

আরও পড়ুন: পৌঁছল এলনের রকেট

অন্য বিষয়গুলি:

Donal Trump America George Floyd
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy