Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Donald Trump Assassination Attempt

‘সুপারহিরো’, দুই সন্তানের পিতা, ট্রাম্পের সভায় আততায়ীর গুলিতে নিহত কে এই কোরি?

শনিবার নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলি তাঁর কান ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলেও নিহত হন এক সমর্থক। মৃত ব্যক্তির নাম কোরি কম্পারেটর। আহত আরও দুই।

(বাঁ দিকে) নিহত কোরি কম্পারেটর। কোরির মেয়ে অ্যালিসনের ফেসবুক পোস্ট (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নিহত কোরি কম্পারেটর। কোরির মেয়ে অ্যালিসনের ফেসবুক পোস্ট (ডান দিকে)। ছবি: এক্স (পূর্বতন টুইটার)।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ১২:৫১
Share: Save:

শনিবার আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সভায় উপস্থিত ছিলেন। আর সেই সভায় থাকাটাই কাল হল। ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা আততায়ীর এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হলেন দর্শকের আসনে থাকা কোরি কম্পারেটর।

পেনসিলভেনিয়ারই বাসিন্দা ছিলেন কোরি। বয়স ৫০ বছর, পেশায় দমকলকর্মী। ছিলেন দুই সন্তানের পিতাও। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, স্ত্রী ও সন্তানদের গুলির কবল থেকে বাঁচাতে গিয়েই প্রাণ দেন কোরি।

কোরির মেয়ে অ্যালিসন সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমার বাবা ছিলেন একজন বাস্তবের সুপারহিরো। সুপারহিরোর মতই মারা গেছেন, অথচ আমাদের গায়ে এতটুকু আঁচ পর্যন্ত লাগতে দেননি।’’ হাসিখুশি এই প্রৌঢ় খুব মিশুকেও ছিলেন। সহজেই ভাব জমিয়ে নিতে পারতেন অচেনা মানুষের সঙ্গে। সব সময় সকলকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতেন।

সমাজমাধ্যমে হামলার সময়ের ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন অ্যালিসন। লিখেছেন, তিনিও সে দিন মা-বাবার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের সভায়। আচমকা আততায়ীর গুলি ধেয়ে আসে তাঁদের দিকে। স্ত্রী ও মেয়েকে বাঁচাতে তাঁদের ধাক্কা মেরে সরিয়ে মাটিতে ফেলে দেন কোরি। গুলি যাতে তাঁর পরিবারের কারও গায়ে না লাগে, সে জন্য তাঁদের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়েন তিনি। গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন পেনসিলভেনিয়া স্টেট গভর্নর জশ শ্যাপিরো। কোরির পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। শ্যাপিরো ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা শুধু কমনওয়েলথের জন্যই নয়, দেশের জন্যও ভয়াবহ। কোরি সত্যিই একজন ‘হিরো’ ছিলেন, যিনি পরিবারকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন। তাঁকে সম্মানজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।’’

শনিবার পেনসিলভেনিয়ার বাটলারের ওই সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে যিনি গুলি ছুড়েছিলেন, তাঁর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুক, বয়স ২০ বছর। পুলিশ এবং রক্ষীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন ক্রুক। তবে তাঁর ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে কোরির। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু’জন। তাঁদের নাম ডেভিড ডাচ ও জেমস কোপেনহাভের, বয়স যথাক্রমে ৫৭ ও ৭৪ বছর।

ট্রাম্পের মঞ্চ যেখানে ছিল, তার থেকে মাত্র ১৩০ গজ (১১৯ মিটার) দূরের উঁচু একটি ছাদ থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে সভা চলাকালীন একাধিক গুলি ছুড়েছিলেন ক্রুক। সঙ্গে সঙ্গে দু’হাতে কান চেপে মঞ্চেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। সতর্ক হয়ে যান সিক্রেট সার্ভিস কাউন্টার-স্নাইপার দলের সদস্যেরা। তাঁরা ক্রুককে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়েন। সভাস্থলে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ঘটনার ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, এর পরই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দ্রুত মঞ্চ থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সিক্রেট সার্ভিস বাহিনী। একটু পরে দেখা যায়, ট্রাম্পের ডান কানের পাশ থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। তবে গুলি কান ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলেও এখন সুস্থ রয়েছেন ট্রাম্প।

ঘটনা প্রসঙ্গে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। গুলি আমার কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে। ডান কানের উপরের দিকের চামড়া গুলিতে চিরে গিয়েছে…। আমাদের দেশে যে এমনটা ঘটতে পারে, ভাবতেই পারি না।’’ দলমত নির্বিশেষে ট্রাম্পের সভায় এই হামলার ঘটনার নিন্দা করেছেন আমেরিকার রাজনৈতিক নেতারা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় এই ধরনের হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এই হিংসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত এবং এর নিন্দা করা উচিত।’’ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy