করমর্দন: যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের শেষে ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার লন্ডনে। রয়টার্স
রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে দ্বিতীয় দিনে মেয়ে-জামাই এবং স্ত্রীকে নিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে পৌঁছলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং তাঁর স্বামী ফিলিপের সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। তবে গুরুত্বপূর্ণ দুই রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাতের সমান্তরালে মধ্য লন্ডন জুড়ে বিক্ষোভের নানা ছবি জানান দিল, ট্রাম্প আসায় খুশি নয় ব্রিটেনের একটা বড় অংশ।
ট্রাম্পের লিমুজ়িন ‘বিস্ট’ যখন আজ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে এগোচ্ছিল, তখনই লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ারে উড়ছে ২০ ফুট উঁচু ‘বেবি ট্রাম্প’ বেলুন। একটি ব্রিটিশ পত্রিকার দাবি, ট্রাম্প যাওয়ার পথে সেটা অবশ্যই দেখতে পেয়েছেন। প্রতিবাদের জমায়েতে এসেছিলেন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। যিনি ট্রাম্পের সঙ্গে পরে দেখা করতে চাইলেও সুযোগ পাননি। পরে মে-র সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘‘করবিনকে আমি চিনি না। ওঁকে আমার খুব ইতিবাচক ব্যক্তি বলে মনেও হয়নি। যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁদের আমি পছন্দ করি না। যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ভাল লাগে।’’
ব্রিটেনের এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, আপনাকে ঘিরে দেশে যে প্রতিবাদ চলছে, তা নিয়ে আপনি কী বলবেন? আর আপনার কি সত্যিই মনে হয়, লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এক জন হেরে যাওয়া মানুষ?
উত্তরে ট্রাম্প তাঁর টুইটের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই বলেন, ‘‘সামান্য ছোটখাটো কিছু প্রতিবাদ হয়েছে দেখলাম। খুবই ছোট। ভুয়ো খবর দিয়ে ওগুলোই ছড়ানো হচ্ছে। আমি তো দারুণ ভালবাসা পেয়েছি, চার দিকে আমেরিকা আর ব্রিটেনের পতাকা দেখেছি।’’ ঘটনাচক্রে, প্রতিবাদে আসার কথা ছিল অন্তত আড়াই লক্ষ মানুষের। শেষমেশ ট্রাফালগার স্কোয়ারে এসেছিলেন মাত্র কয়েক হাজার। মধ্য লন্ডনে ট্রাম্পের আদলে একটি ১৬ ফুটের মূর্তি বসানো হয়েছিল— যাতে দেখা যাচ্ছে, সোনালি কমোডের উপরে বসে টুইটে মগ্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মূর্তি থেকে শব্দও বেরোচ্ছে, যেগুলো ট্রাম্পের ‘প্রিয়’ বলেই পরিচিত। যেমন ‘ভুয়ো খবর’, ‘যোগসাজশ হয়নি’ ইত্যাদি। সাদিক খান প্রসঙ্গে ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘‘উনি ঠিকমতো কাজ করতে পারেননি, সন্দেহ নেই। এখানে অপরাধের হার অনেক বেড়ে গিয়েছে।’’
মেক্সিকো প্রসঙ্গে প্রশ্ন আসে মার্কিন সাংবাদিকের কাছ থেকে। এখানেও ট্রাম্প ফের ‘প্রাচীরের’ কথা তোলেন। বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছে সীমান্তে। রক্ষীরা দারুণ কাজ করছে। কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের জন্য কিছু করে উঠতে পারছি না। মেক্সিকোর উচিত সক্রিয় হওয়া। না-হলে আমেরিকা কর বাড়িয়ে যাবে।’’
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক কথা হয়েছে ট্রাম্প-মে-র। যদিও এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সব নিয়েই কথা হবে।’’ মে অবশ্য বলেন, ‘‘দু’পক্ষ যে যে প্রসঙ্গে সহমত হবে, কথা হবে সে সব প্রসঙ্গেই।’’ বৈঠক শেষ হয় একটু রসিকতা দিয়ে। প্রশ্ন আসে— প্রেসিডেন্ট ব্রেক্সিট নিয়ে মে-কে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা তিনি মেনেছেন কি? উত্তরে মে বলেন, ‘‘আমার পরে যিনি আসবেন, তিনিই এটা নিয়ে ভাবুন। যত দূর মনে পড়ে, প্রেসিডেন্ট আমায় বলেছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ছেড়ে কথা বলবেন না!’’ মন্তব্যের পরে সাংবাদিক এবং সহাস্য ট্রাম্পকে দেখে হাসতে হাসতে ফের মে বলে ওঠেন, ‘‘আমরা মীমাংসাসূচক আলোচনায় বিশ্বাসী। এখনও মানি, ব্রিটেনের মানুষই শেষ কথা বলবেন। আমার পরে যিনি আসবেন, তিনি নিশ্চয়ই সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন।’’ ট্রাম্প যা শুনে বলেন, ‘‘উনি আমার চেয়ে ভাল মধ্যস্থ।’’ ব্রেক্সিট হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্প মে-কেই প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে অনুরোধ জানান। মে স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমি এক কথার মানুষ। ৭ জুনই পদ থেকে সরে যাব।’’
১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রেক্সিট, ইরান, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা হয়েছে ট্রাম্প-মে-র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy