দোকানদার নেই, এখানে জিনিস নিন, টাকা রেখে যান নিজেই
দু’পাশে ঘন জঙ্গল। মাঝ দিয়ে এগিয়ে চলেছে রাস্তা। সেই রাস্তায় চলতে গেলে মাঝে মধ্যেই থমকে দাঁড়াতে হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
দু’পাশে ঘন জঙ্গল। মাঝ দিয়ে এগিয়ে চলেছে রাস্তা। সেই রাস্তায় চলতে গেলে মাঝে মধ্যেই থমকে দাঁড়াতে হয়।
০২১২
প্রায় জনমানবহীন রাস্তার ধারে সুন্দর ভাবে সাজানো ছোট ছোট দোকান। কোনও দোকানে ফল, সব্জি রাখা, তো কোনওটায় ফুল, আচার-সহ নানা খাদ্যদ্রব্য।
০৩১২
একটু ধৈর্য্য ধরে দেখলে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য আপনি ঠিকই পেয়ে যাবেন। আর পাঁচটা সাধারণ দোকানের মতো দেখতে হলেও এই সব দোকানের একটা বিষয় কিন্তু অনন্য।
০৪১২
এই দোকানগুলোতে না আছে কোনও দরজা, না পাবেন সারাদিনে কোনও দোকানদারের দেখা। নিজেই পছন্দমতো বাজার করুন আর তার ন্যায্য দাম দিয়ে বাড়ি ফিরুন।
০৫১২
সততার এই বিরল নজির গড়েছে মিজোরাম। এখানে ক্রেতা-বিক্রেতা মুখোমুখি না হলেও, তাঁদের সম্পর্ক যেন কোনও এক সততার মালায় সুন্দর করে গাঁথা।
০৬১২
মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ছোট এই গ্রাম সেলিঙ্গ। সেই গ্রামের মানুষদের মূলত চাষাবাদই জীবিকা।
০৭১২
প্রায় সকলেই ঝুম চাষি। ফলে চাষের জন্য প্রায়ই নতুন নতুন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে হয় তাঁদের। পরিবারের সকলেই একসঙ্গে রোজ সকাল হলেই চাষাবাদের কাজে বেরিয়ে পড়েন।
০৮১২
সারাদিনে দোকানে বেচাকেনা খুব একটা হয় না। এই অবস্থায় যদি পরিবারের কেউ সারাদিন দোকানে বসেই কাটিয়ে দেন, তা হলে চাষের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
০৯১২
সে কারণে রোজ সকাল হলেই চাষিরা তাঁদের জমির ফসল, বাগানের ফল নিয়ে নিজের দোকানে চলে আসেন। প্রতিটা সব্জির গায়ে মূল্য লিখে দিয়ে কাঠের তৈরি ছোট দোকানে পসরা সাজিয়ে দেন।
১০১২
সাধারণত চক বা কালি দিয়েই সব্জি, ফলের গায়ে আলাদা আলাদা দাম লিখে রাখেন তাঁরা। পাশে টাকা জমার একটা কাঠের বাক্সও রেখে দেন। দোকান সাজিয়ে তাঁরা চলে যান চাষের কাজে।
১১১২
সন্ধ্যায় ফেরার সময় ফের একবার দোকানে এসে সব্জির মূল্য সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন। এইভাবেই দিন চলে এই গ্রামের।
১২১২
ভাবতে অবাক লাগলেও, ঠিক এমনটাই হয়। ওই মিজো মানুষেরা সরল মনে ক্রেতাদের উপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখেন। ক্রেতারাও কখনও তাঁদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করেননি। কারও কাছে যদি খুচরো টাকা না থাকে, তা হলে তিনি ন্যায্য মূল্যের বিনিময়ে ওই কাঠের বাক্স থেকেই ফেরত টাকা নিয়ে নেন।