আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তির বার্তা দিতে এর আগেও একাধিক বার মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীকে কাজে লাগিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফাইল ছবি।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তির বার্তা দিতে এর আগেও একাধিক বার মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীকে কাজে লাগিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার জাপানে আসন্ন জি৭ গোষ্ঠীর বৈঠক (১৯ থেকে ২১ মে) যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়ায় ঢাকা পড়তে চলেছে, নয়াদিল্লি শান্তির প্রতীক খুঁজবে সেই গান্ধীতেই। সম্মেলনটি হবে হিরোশিমায়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ধ্বংস হওয়া ওই শহরেই গান্ধীর আবক্ষমূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জি৭ ভুক্ত রাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রিত দেশ হিসাবে যোগ দিচ্ছে ভারত। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, সম্প্রতি জি২০-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যৌথ বিবৃতিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে মেরু বিভাজনের কারণে। ভারতের অবস্থান এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এক দিকে নয়াদিল্লির উপরে পশ্চিমের চাপ বাড়ছে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়েভ্লাদিমির পুতিনকে অস্ত্রত্যাগে বাধ্য করার জন্য। অন্য দিকে রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি-সম্পর্ক ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে নয়াদিল্লি। চাপ শুধু বাইরে নয়, দেশের ভিতরেও বিরোধী দল থেকে অভিযোগ উঠছে, নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি সংস্থাকে লাভ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সস্তায় রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করছে নয়াদিল্লি।
এ হেন জটিল পরিস্থিতিতে গান্ধী শরণে কেন্দ্র। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, চলতি যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ফের ভারতের অবস্থানকেই প্রথম বিশ্বের ওই মঞ্চে তুলে ধরবেন। সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমেই সংঘাতের নিরসনের আবেদন করবেন মোদী। এর আগে তিনি পুতিনকে বলেছিলেন, এই সময় যুদ্ধের নয়। খাদ্য, সার এবং জ্বালানির নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার সময়। আবারও সেই কথাই শোনা যাবে তাঁর মুখে। এক শীর্ষ কূটনীতিকের কথায়, “আন্তর্জাতিক সঙ্কটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিয়মিত মতামত দেওয়া এবং ভারতের অবস্থানকে তুলে ধরার ঘটনায় আজ এটা স্পষ্ট যে ভারতের গুরুত্ব আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাড়ছে। পরিবেশ দূষণ, উষ্ণায়ন, সন্ত্রাসবাদ, স্বাস্থ্য, সুস্থায়ী উন্নয়নের মতো আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত স্বাধীন এবং সাহসী সমাধান সূত্র নিয়ে এসেছে বার বার। কোভিডের সময়ে তা প্রমাণিত।”
ভারত ছাড়াও হিরোশিমায় জি৭ সম্মেলনে আমন্ত্রিত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম। থাকবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলির মঞ্চ, আফ্রিকান ইউনিয়ন। জি৭ বৈঠকের কী ফলাফল হয়, তার উপরে বছরের শেষে ভারতে জি২০ শীর্ষ বৈঠকের পরিণতি অনেকটাই নির্ভর করছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy