Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Afghan Taliban

আফগান-সীমান্তে দখল বাড়াচ্ছে তালিবান

দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চলই তাদের হাতের মুঠোয়। এ বার আফগানিস্তানের উত্তরে একের পর এক এলাকা দখলে তৎপর তালিবান।

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৭:০১
Share: Save:

দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চলই তাদের হাতের মুঠোয়। এ বার আফগানিস্তানের উত্তরে একের পর এক এলাকা দখলে তৎপর তালিবান। তাজিকিস্তান সীমান্ত এলাকায় ক্ষমতা বাড়ানোর কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে অবস্থিত শির খান বন্দরের দখল নিল তারা। সে দেশ থেকে আমেরিকা এবং ন্যাটোর বাহিনী সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই গতি পেয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা শেষ হওয়ার কথা। তার মধ্যে আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতি চিন্তা বাড়িয়েছে নিরাপত্তা বিষয়ক পর্যবেক্ষকদের। আফগানিস্তানের প্রায় ৮১টি জেলা ইতিমধ্যেই তালিবানের দখলে চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন পেন্টাগনের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক। বিষয়টির দিকে তারা বিশেষ নজর রাখছে বলে আশ্বাস পেন্টাগনের।

বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে এটা স্পষ্ট যে তালিবান আগ্রাসনের সামনে রীতিমতো হার মেনেছে আফগান বাহিনী, দাবি পর্যবেক্ষকদের। তাজিকিস্তানের সঙ্গে দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিপথ কুন্দুজ় শহর। যার দখল আগেই নিয়েছে তালিবান। সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে আশপাশের গ্রামীণ অঞ্চলেও। এ সব এলাকায় তাদের শক্তি এতটাই বেড়েছে যে প্রাণের দায়ে আফগান বাহিনীর অনেকেই সীমান্ত টপকে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। বন্দর এলাকা দখলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। সম্প্রতি তালিবান নেতৃত্ব এও জানায় যে, বন্দর এলাকাগুলির কাজকর্মে তারা কোনও রকমের বাধা সৃষ্টি করবে না। তবে তা তখনই সম্ভব যখন, আফগান বাহিনী তালিবানি শাসন মেনে নেবে। তালিবান-দমনে আফগান সরকারের অক্ষমতা ফের এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বিষয়টি, দাবি আন্তর্জাতিক মহলের।

কিছু কিছু জায়গায় প্রায় বিনা প্রতিরোধেই ঘাঁটি গেড়েছে তালিবান বাহিনী। যেমনটা হয়েছে উত্তর আফগানিস্তানের সীমান্ত জেলা ইমাম সাহিবে। এলাকা দখলের লক্ষ্যে টানা দু’দিন যুদ্ধ চলেছে সেখানে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্ক বাড়িয়েছে তালিবানের ছোড়া রকেট এবং স্বয়ংক্রিয় বন্দুকের আওয়াজ। পরিবেশ কিছুটা থিতু হতে বাইরে প্রথম পা রেখেই স্থানীয় বাসিন্দা সইদ আক্রম জানতে পারেন, সন্ত্রাসের বলি হয়েছে এলাকার তিন-তিনটি শিশু। দেখেন, রাস্তার মোড়ে তখনও জ্বলছে একটি ট্যাঙ্কার। পুড়ে ছাই বেশ কয়েকটি দোকান। আর রাস্তায় টহল দিচ্ছে তালিবান বাহিনী। আক্রমের কথায়, ‘‘সে কমপক্ষে ৩০০ জন তো হবেই! এলাকায় টহলদারি আফগান সেনার সংখ্যা শ’খানেকেরও কম ছিল। তাঁদের হটিয়ে এলাকার দখল নিতে বেগ পেতে হয়নি তালিবানের। রাস্তার দু’ধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল একাধিক সেনার দেহ। তবে শুনলাম অনেকেই নাকি প্রাণ হাতে করে পালিয়ে গিয়েছেন।’’

কূটনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ দোশি জেলাও এখন তালিবানের দখলে। উত্তর আফগানিস্তানের সঙ্গে রাজধানী কাবুলের সংযোগকারী একমাত্র রাস্তাটি গিয়েছে এই জেলা মধ্যে দিয়েই। যে কারণে আতঙ্কিত আফগান সরকার এ বার স্থানীয় ‘স্বেচ্ছাসৈনিকদের’ হাতে অস্ত্র তুলে দিতে ‘বাধ্য’ হয়েছে। অন্তত দাবি এমনটাই। বুধবার কাবুলের উত্তর প্রান্তের কো দামানে পুলিশের সামনে দিয়ে স্থানীয়দের একটি সশস্ত্র মিছিলের ছবি উঠে আসে একাধিক সংবাদমাধ্যমে। দেখা যায়, ‘অপরাধীরা নিপাত যাক!’, ‘তালিবানের মৃত্যু হোক!’ স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে চলা অংশগ্রহণকারীদের কারও কাঁধে গ্রেনেড লঞ্চার, কেউ কেউ আবার চলেছেন বন্দুক উঁচিয়ে।

তালিবানের আতঙ্ক তো রয়েছেই। পাশাপাশি দেশবাসীদের মধ্যে চড়া হচ্ছে প্রেসিডেন্ট আসরফ গনি সরকারের প্রতি বিরক্তির সুরও। যেমন স্বেচ্ছাসৈনিকদের মিছিল থেকে খানিক দূরে দাঁড়িয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন আব্দুল খাসানি। তাঁর কথায়, ‘‘তালিবানের জন্যেও দেশবাসী কষ্টভোগ করছে, আর সরকারের জন্যেও তাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Afghan Taliban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy