তিন দিনের সফরে সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন কোরোশি। ছবি: সংগৃহীত।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন, বর্তমান পরিষদ একেবারে অকেজো হয়ে গিয়েছে। এমনটাই ধারণা রাষ্ট্রপুঞ্জের জেনারেল অ্যাসেম্বলি প্রেসিডেন্ট চাবা কোরোশির। তিনি সোমবার জানিয়েছেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলেই স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ নতুন করে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন।
তিন দিনের সফরে সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন কোরোশি। দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশ মন্ত্রী পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর সঙ্গে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়েও প্রশংসা করেছেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী কয়েক মাসে আরও রক্তক্ষয়ী হতে চলেছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। সেটা আঁচ করেই কোরোশির এই মন্তব্য। এ দিকে, ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে সটান ‘না’ বলে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় তখন থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া থেকে কড়া সমালোচনায় সরব হয়েছিল আমেরিকা। সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কার্যত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দিকে। দু’জনের টেলিফোনে কথাবার্তা, এক মাস আগে জ়েলেনস্কির ওয়াশিংটন সফর সবেতেই স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল যে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে আমেরিকা। তবে, সেই ধারণাটিই যেন খানিক টাল খেল সোমবার। যখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানালেন, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠানো হচ্ছে না ইউক্রেনে। বাইডেনের এই উত্তরে খানিক যেন নড়েচড়েই বসেছে কিভ প্রশাসন ও বিশ্বের বাকি দেশগুলো। যদিও, পরে বাইডেন জানান, এই প্রসঙ্গে জ়েলেনস্কির সঙ্গে আলোচনাকরবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ঠিক এক দিন আগেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় জানিয়েছেন, জার্মানিও কোনও ধরনের যুদ্ধবিমান পাঠাবে না কিভে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে একটি সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। সেখানেই এই প্রশ্নোত্তর পর্ব ঘটেছে। সাংবাদিকটি জিজ্ঞাসা করেন, ইউক্রেনকে সাহায্যের জন্য আমেরিকার এফ-১৬ বা ওই ধরনের কোনও যুদ্ধবিমান পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে কি না। বাইডেনের উত্তর ছিল এক কথায়, ‘না।’ এই উত্তরের পরে এই প্রসঙ্গে আর কোনও কথাও বলেননি তিনি।
গত সপ্তাহেই ইউক্রেনকে সাহায্যের জন্য যুদ্ধের ট্যাঙ্ক পাঠাতে সম্মত হয়েছে আমেরিকা ও জার্মানি। আমেরিকার তরফে পাঠানো হচ্ছে এম ১ আব্রামস, যা আধুনিকতম বলে সেনাবাহিনী সূত্রে খবর। জার্মানি পাঠাচ্ছে লেপার্ড ২ নামক যুদ্ধের ট্যাঙ্ক। ইউক্রেনের উপ বিদেশ মন্ত্রী এই ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, তিনি এ-ও বলেছেন, পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে ‘যুদ্ধবিমান চুক্তি’ করতে আগ্রহী ইউক্রেন। এর ফলে রুশ হামলার প্রতিরোধে তাদের কাছে থাকবে ইউরোফাইটার, টর্নেডো, ফ্রেঞ্চ রাফাল ও সুইডিশ গ্রিপেন জেট জাতীয় যুদ্ধবিমান। সোমবার এই বিষয়ে সদর্থক মন্তব্য করেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। তবে, তিনি এ-ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এতে যুদ্ধ আরও বাড়তে পারে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় অবশ্য বলেছেন, ট্যাঙ্ক পাঠানোর পরেই যুদ্ধবিমান পাঠানো খুব একটা কার্যকর সিদ্ধান্ত নয়।
মঙ্গলবার প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে ব্রিটেনের মুখেও। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের দফতরের মুখপাত্র মঙ্গলবার বলেন, “ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানো সম্ভব নয়।” তিনি এ-ও বলেছেন, চতুর্থ প্রজন্মের এই বিমানগুলি শিখতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত যুক্তিসম্মত নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy