Thailand's long neck village where every woman's neck is long enough dgtl
International news
এ গ্রামে মহিলাদের গলা ‘জিরাফ’-এর মতো লম্বা, কেন জানেন?
লম্বা গলার মহিলাদের দেখতে এবং তাঁদের ছবি তুলতে প্রতিনিয়তই এই গ্রামে হানা দেন পর্যটকেরা। কারণ এত লম্বা গলার মহিলাদের দেখা বিশ্বের আর কোথাও মেলে না।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ১১:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
‘লং নেক ওম্যান ভিলেজ’ অর্থাৎ লম্বা গলা মহিলাদের গ্রাম। এই গ্রামের নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। তাইল্যান্ডের চিয়াং মে-তে অবস্থিত এই গ্রাম পর্যটকদের কাছে বহুল পরিচিত। লম্বা গলার মহিলাদের দেখতে এবং তাঁদের ছবি তুলতে প্রতিনিয়তই এই গ্রামে হানা দেন পর্যটকেরা। কারণ এত লম্বা গলার মহিলাদের দেখা বিশ্বের আর কোথাও মেলে না।
০২১১
গলা অদ্ভুত রকমের লম্বা হওয়ায় অনেকে আবার এই মহিলাদের ‘জিরাফ ওম্যান’ বা ‘ড্রাগন ওম্যান’ও বলে থাকেন। তাইল্যান্ডের ‘লং নেক ওম্যান ভিলেজ’-এ মূলত কায়েন সম্প্রদায় মানুষই থাকেন। কিন্তু কেন এই সম্প্রদায়ের মহিলাদের গলা এত লম্বা হয় জানেন?
০৩১১
জন্ম থেকেই অবশ্য কায়েন সম্প্রদায়ের মহিলাদের ‘জিরাফ’-এর মতো লম্বা গলা হয় না। বংশপরম্পরায় সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতেই আসলে নিজেদের গলা লম্বা করে নেন এঁরা নিজেই। কী ভাবে?
০৪১১
গলায় পেঁচানো রিং পরে। গ্রামে কোনও কায়েন কন্যা জন্ম হলে, তার ৫ বছর বয়স থেকেই গলায় সোনালি রঙের পেঁটানো রিং পরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবছর রিংঙের প্যাঁচ বাড়তে থাকে। এ ভাবে একটার পর একটা রিং যোগ করা হয় ২১ বছর পর্যন্ত।
০৫১১
এই ২১ বছরে একবারের জন্যও কিন্তু কায়েন মহিলারা ওই রিং গলা থেকে খোলেন না। অর্থাৎ ৫ বছর বয়স থেকে তাঁরা কেউই নিজেদের গলা চোখে দেখেন না। এটা সত্যিই ভীষণ বিস্ময়কর। ২১ বছর পর যখন এই রিং তাঁদের গলা থেকে খোলা হয়, গলায় রিংয়ের কালো দাগ বসে যায়। গলাটা অদ্ভুদ রকমের সরু আর লম্বা দেখায়।
০৬১১
বিশ্বের বাকি মানুষের কাছে সেটা অদ্ভুত ঠেকলেও লম্বা গলা কায়েন সম্প্রদায়ের কাছে কিন্তু গর্বের বিষয়। যাঁর গলা যত লম্বা, কায়েনদের কাছে তিনিই তত সুন্দরী।
০৭১১
কায়েন সম্প্রদায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাইল্যান্ডের বাসিন্দা নয়। তাঁদের আসল বসতি মায়ানমারের কায়াহ জেলার লয়কাওয়ে। মায়ানমারে সেনা-পুলিশের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তাঁরা তাইল্যান্ডের উত্তরে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেন। তাইল্যান্ডের চিয়াং মে-র সেই উদ্বাস্তু শিবিরই ক্রমে কারেন সম্প্রদায়ের নাম অনুসারে কারেন গ্রাম হিসাবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে।
০৮১১
তাইল্যান্ড সরকার যখন কায়েনদের লম্বা গলার কথা শোনে, দেশের পর্যটন ব্যবস্থার উন্নতির পরিকল্পনা করে তাঁদের ভিসা দিয়ে দেয়। তার পর থেকে কায়েনরা ওই গ্রামেই স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেন।
০৯১১
সারা বছর ধরে প্রচুর পর্যটক এই গ্রামে ভিড় জমান কায়েনদের দেখতে। গ্রামটা এখন লম্বা গলা মহিলাদের গ্রাম হিসেবেই সবাই চেনে। পর্যটকদের নিজেদের বানানো জিনিস বেচে উপার্জনও করতে শুরু করেছেন এই মহিলারা। ফলে তাঁরা আর্থিক ভাবে অনেকটাই সাবলম্বী হয়েছেন।
১০১১
লম্বা গলা মহিলাদের গ্রাম নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এই গ্রাম আসলে একটা চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানায় ‘বন্দি’ কায়েন মহিলারা আর তাঁদের দেখিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে তাইল্যান্ড সরকার। অনেকটা ক্রীতদাস প্রথা থাকাকালীন যেমন অতীতে করা হত।
১১১১
কেন কায়েন মহিলারা নিজেদের গলা লম্বা করার জন্য এত কষ্ট করেন? এটা প্রচলিত রয়েছে যে, মায়ানমারের কায়াহ জেলায় আগে অনেক বাঘ ছিল। তখন নিজেদের রক্ষা করতেই গলা, হাত, পা, কোমর ইত্যাদি জায়গায় এই শক্ত রিং তাঁরা পরতেন। ক্রমে সেটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।