ফাইল চিত্র।
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করেছিল তালিবান। প্রধানমন্ত্রী-সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করা হলেও সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা প্রকাশ করেনি তারা। আজ মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদ। পরে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করে, আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা হবে না বলে জানিয়েছেন মুজাহিদ।
ক্ষমতায় আসার পরে সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠনের আশ্বাস দিয়েছিল তালিবান। মুজাহিদ নিজেও প্রকাশ্যে সে কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, নতুন মন্ত্রিসভায় মহিলাদের ঠাঁই হয়নি। সরকার গঠন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের অধিকার নিয়ে মুখ খোলেননি তালিবান মুখপাত্র। তবে স্কুল স্তরে মেয়েদের পড়াশোনা দ্রুত চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পূর্বতন সরকারের নারী বিষয়ক দফতরটি গত সপ্তাহে বন্ধ করে দিয়েছিল তালিবান সরকার। সেই স্থানে ধর্মীয় আইন সংক্রান্ত নতুন দফতর খোলা হয়েছে। তবে এই নিয়েও চুপ ছিলেন মুজাহিদ। তিনি বলেছেন, ‘‘সমস্ত প্রক্রিয়াটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চূড়ান্ত করতে চলেছি।’’ পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের বেতন শীঘ্র চালু করার কথা বলেছেন তিনি।
সদ্য ঘোষিত মন্ত্রিসভায় অন্তর্বর্তী বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছেন পঞ্জশিরের ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন আজ়িজ়ি। উপ-বাণিজ্যমন্ত্রীর পদে বাঘলানের ব্যবসায়ী মহম্মদ বশির। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন কালান্দর ইবাদ। সহ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে আব্দুল কৈয়ুম জ়াকির। জাতীয় অলিম্পিক কমিটি এবং পারমাণবিক শক্তি দফতরের ভার পেয়েছেন যথাক্রমে নজ়র মহম্মদ মুতমায়েন এবং নাজ়িবুল্লা।
তবে সময় যত এগোচ্ছে তালিবানের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা তত তীব্র হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় দেশের কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী পদে মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দের নাম ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় জল্পনা। অনেকেরই ধারণা ছিল প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন তুলনায় পরিচিত এবং তালিবানের গ্রহণযোগ্য মুখ বরাদর গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর। কিন্তু কার্যনির্বাহী উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয় তাঁর নাম। বরাদরের এই ‘পদাবনতি’র পরে পরেই ক্ষমতার দখলকে কেন্দ্র করে বরাদরের গোষ্ঠীর সঙ্গে হক্কানি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ্যে এসে পড়ে। তবে তালিবানের তরফে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে বরাদর কন্দহর থেকে ভিডিয়ো বার্তা দেন, তিনি অক্ষত ও সম্পূর্ণ সুস্থ। সূত্রের খবর, কন্দহরে তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজ়াদার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বরাদর। সেখানে প্রবীণ জনজাতি নেতাদের সঙ্গে তিনি সভা করেন বলেও জানা যায়।
তবে গত কাল একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বরাদর কন্দহরে তাঁর সমর্থনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রবীণদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে সরকারি টিভি চ্যানেলে ভিডিয়ো বার্তাও প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছেন। সরকারি টিভি এখন তালিবানের দখলে। আফগান পর্যবেক্ষকদের মতে, বরাদর যে ভাবে টিভি-তে বিবৃতি পাঠ করেছেন তা দেখে মনে হচ্ছে তাঁকে কন্দহরে পণবন্দি করে রাখা হয়েছে। তালিবানের শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজ়াদা আদৌ জীবিত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট হক্কানি গোষ্ঠীর প্রভাব ঠেকানো কঠিন হবে। ওই গোষ্ঠীর নেতারা ইতিমধ্যেই ‘আন্তর্জাতিক জেহাদ’-এর ডাক দিয়েছেন। সূত্রের খবর, আইএসআই প্রধান ফৈজ় হামিদ বরাদর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হক্কানিদের সমর্থন করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy