ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার সময়ে গোটা বিশ্বকে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, গত বারের থেকে অনেক বেশি উদার নীতি নিয়ে দেশ শাসন করবে। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে, তালিবানি শাসনের আসল ছবিটা বিশ্বের সামনে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। সরকার গড়ার পরেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার উপরে কোপ পড়েছে। সরকারি চাকরি থেকেও বাদ পড়েছেন মহিলারা। এ বার মহিলাদের গাড়ি চালানোর উপরে রাশ টানতে চলেছে তালিবান সরকার। তার প্রথম ধাপ হেরাট।
বরাবরই রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত আফগানিস্তান। তবু বেশ কিছু বড় শহরে মহিলারা স্বাধীন ভাবে গাড়ি চালাতে পারতেন। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের হেরাটে বেশির ভাগ মহিলা নিজেরা গাড়ি চালাতে অভ্যস্ত। তালিবান এখন মেয়েদের সেই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। হেরাটের পরিবহণ বিভাগকে তালিবানি শাসকেরা ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে যে, আর কোনও মহিলাকে যেন ড্রাইভিং লাইসন্স না দেওয়া হয়। তবে পুরোটাই মৌখিক। লিখিত ভাবে সরকারি কোনও নির্দেশ তারা দেয়নি। বস্তুত, দ্বিতীয় দফার শাসনকালে দেশের নাগরিকদের স্বাধীনতা ও অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে গেলে বিশেষ করে নারী স্বাধীনতার ক্ষেত্রে, তা মৌখিক ভাবে করছে তালিবান। লিখিত ডিক্রি জারি না করে পুরোটা তারা ছেড়ে দিচ্ছে প্রাদেশিক সরকারের উপরে।
এ ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হতে চলছে। হেরাটের ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রধান জান আগা আচাকজ়াই পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মহিলাদের নতুন লাইসেন্স দিতে বারণ করা হয়েছে। তবে যে সব মহিলা শহরে গাড়ি চালান, তাঁদের জন্য এখনও কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। ২৯ বছরের আদিলা আদিল গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষক। হেরাটে তাঁর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বললেন, ‘‘মেয়েদের ড্রাইভিং শিক্ষা দিতে বারণ করা হয়েছে আমাদের। নতুন করে লাইসেন্স দিতেও নিষেধ করা হয়েছে। আসলে তালিবান এই প্রজন্মকে সেই সুবিধে দিতে চায় না, যেটা তাদের মায়েরা পেয়ে এসেছেন।’’ হেরাটের প্রাদেশিক তথ্য ও সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান নিয়াম আল-হক হক্কানি অবশ্য জানালেন, মহিলাদের লাইসেন্সের উপরে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি।
ইদের বাজার করতে নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্থানীয় বাজারে যাচ্ছিলেন শাইমা ওয়াফা নামে এক মহিলা। সাংবাদিককে বললেন, ‘‘এক তালিবান রক্ষীকে আমি তো বলেই দিয়েছি যে, পুরুষ ট্যাক্সি চালকের পাশে বসে বাজারে যাওয়ার থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে যেতেই আমি বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি।’’ তিনি আরও জানালেন, তিনি গাড়ি চালাতে পারেন বলে প্রয়োজনে পরিবারের কাউকে চিকিৎসকের কাছে তিনি নিজেই নিয়ে যেতে পারেন। স্বামী বা ভাইয়ের কাজ থেকে ফেরার অপেক্ষা করতে হয় না তাঁকে। একই মত ফেরেস্তে ইয়াকুবি নামে আর এক মহিলার। জানালেন, গণপরিবহণের থেকে নিজের গাড়িতেই বেশি নিরাপদ বোধ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও গাড়িতে তো লেখা থাকে না যে সেটা শুধু কোনও পুরুষই চালাতে পারবেন।’’
ছাব্বিশের তরুণী জ়াইনাব মোহসেনি সম্প্রতি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তিনি সেটা আর পাবেন কি না, তা নিয়েই এখন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। হতাশ তরুণী বললেন, ‘‘এটা তো স্পষ্টই যে, ধীরে ধীরে মহিলাদের উপরে কড়াকড়ি আরও বাড়াতে চলেছে তালিবান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy