ছবি: সংগৃহীত।
তালিবান সরকারের ডাকে আফগানিস্তানের কাবুলে অনুষ্ঠিত হল মহাসম্মেলন। এই সম্মেলনে হাজির ছিলেন দেশের সকল ধর্মীয়, জনজাতির নেতা। ছিলেন নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। হাজির ছিলেন তালিবান প্রধান হিবাতুল্লা আখুন্দজ়াদা। গত কাল শেষ হওয়া তিন দিনের ওই মহাসম্মেলনে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, দেশের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধ আফগান সমাজ গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে মহাসম্মেলন থেকে আবেদন করা হয়েছে, তালিবান সরকারকে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং যে নিষেধাজ্ঞাগুলি আফগানিস্তানের উপরে বলবৎ রয়েছে, তা প্রত্যাহার করা হোক।
আফগানিস্তান সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অভিমুখ নির্ধারণের জন্য ঐতিহ্যশালী ‘লোয়া জিরগা’ (মহাসম্মেলন) ডাকা হত। তার আদলেই এ বার মহাসম্মেলনের ডাক দিয়েছিল তালিবান সরকার। এই সম্মেলনে মূলত তালিবান সমর্থক ও ধর্মীয় নেতারা হাজির ছিলেন। মহিলাদের অংশ নেওয়ার অনুমতি ছিল না। সম্মেলনে উপস্থিত ধর্মীয় নেতা মুজির-উল-রহমান আনসারি জানান, সভায় ১১ দফা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, আফগানিস্তানে দ্বিতীয় দফায় তালিবান সরকার প্রতিষ্ঠার পরে আন্তর্জাতিক মহল যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা প্রত্যাহারের আবেদন। রাষ্ট্রপুঞ্জ, ইসলামিক অর্গানাইজেশন-সহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি এবং বিভিন্ন দেশগুলির কাছে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
এই মহাসম্মেলনে আখুন্দজ়াদা হাজির থাকবেন তা প্রথমে জানানো হয়নি। রীতিমতো চমক দিয়েই গত শুক্রবার সেখানে হাজির হন তিনি। মহাসম্মেলনে বক্তৃতাও দেন তিনি। তাঁর ঘণ্টাখানেকের বক্তৃতা সরকারি রেডিয়োতে সম্প্রচারিত হয়েছে। তালিবানের আফগানিস্তান দখলকে মুসলিম সমাজের জয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আখুন্দজ়াদা।
দেশের প্রতিটি জেলা থেকে দু’জন ধর্মীয় নেতা ও নাগরিক সমাজের এক জন বিশিষ্ট ব্যক্তি হাজির ছিলেন ওই মহাসম্মেলনে। প্রতিটি পুলিশ জেলা থেকেও দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক জন ধর্মীয় নেতা সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন। রহমান আনসারি জানান, অন্তত সাড়ে চার হাজার প্রতিনিধি মহাসম্মেলনে হাজির ছিলেন। তাঁরা তালিবান সরকার এবং আখুন্দজ়াদার প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। ১১ দফার প্রস্তাবে সরকারের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি, আধুনিক শিক্ষা, ন্যায়বিচার, শিল্প স্থাপন শিশু,মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা যেন সুনিশ্চিত করা হয়।
মহাসম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের অন্যতম ধর্মীয়নেতা আব্দুল মাতিন মাহির। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে রয়েছি। এই মহাসম্মেলন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করবে এবং যে সকল নাগরিক দেশ ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের দেশে ফেরার ব্যাপারে ইতিবাচকবার্তা দেবে।’’
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কাবুল পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির লোয়া জিরগা হলে এই মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। তার কাছেই গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। পরে তালিবান মুখপাত্র জ়াবিউল্লা মুজাহিদ জানান, হ্যান্ড গ্রেনেড নিয়ে কেউ হামলা করতে পারে এমন সন্দেহে নিরাপত্তা রক্ষীরা গুলি চালিয়েছিল। তবে বড়সড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। সূত্রের দাবি, ওই মহাসম্মেলন চলাকালীন হামলার ছক কষেছিল তালিবান বিরোধী জঙ্গি সংগঠন আইএস-খোরাসান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy