বিয়ের গাউনটা পরতে গিয়ে চমকে উঠলেন জো ডু। অসাবধানে ভেঙে গিয়েছে জামার পিছনের দিকের চেনটা। বাড়ির সবাই মিলে বহু চেষ্টা করেও সারাতে পারলেন না। এ দিকে বিয়ের তখন আর ঘণ্টা কয়েক মাত্র বাকি। হঠাৎ দেবদূতের মতো উদয় হলেন মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলোক। পড়শির অতিথি তিনি। দক্ষ হাতে, চোখের নিমেষে সারিয়ে ফেললেন চেন। হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন বাড়ির সকলে।
আর সবার মুখে হাসি ফোটালেন যিনি, সেই ইব্রাহিম হালিল ডুডুর মনে পড়ে গেল সুদূর আলেপ্পোয় ফেলে আসা তাঁর ছোট্ট দোকানটার কথা। জঙ্গিদের বোমায় যা গুঁড়িয়ে গিয়েছে বছর কয়েক আগে!
সিরিয়া থেকে কানাডায় এসে অন্টারিওতে ডেভিড হবসন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় মিলেছিল শরণার্থী পরিবারটির। পরিবারের কর্তা ইব্রাহিম হালিল ডুডুর ২৮ বছরের পুরনো দর্জির দোকান ছিল সিরিয়ার আলেপ্পোয়। প্রতিবেশীর বিপদ দেখে তাই হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি পাকা দর্জিটি।
বিয়ের ছবি তুলতে এসে গোটা ঘটনাটি নিজের চোখে দেখেছিলেন লিন্ডসে কোল্টার। ফেসবুকে নিজের সেই অভিজ্ঞতা লেখার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
লিন্ডসে জানান, সব শোনার পর হালিল ডুডু নিজেই তাঁদের সাহায্য করতে রাজি হন। তাঁদের প্রতিবেশীই পরিচয় করিয়ে দেন শরণার্থী হালিল ও তাঁর ছেলের সঙ্গে। জানান, মাত্র চার দিন আগে কানাডায় এসেছেন তাঁরা। কিন্তু সাহায্য করবেন কী, এক বর্ণ ইংরেজিও তো জানা নেই হালিলদের। অবশেষে ‘গুগ্ল ট্রান্সলেটর’ দিয়ে অনুবাদ করে কথাবার্তা চালাতে থাকেন তাঁরা।
সিরিয়ার পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে সবই হারিয়েছেন হালিলরা। গত এক বছরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে তাঁদের বাড়ি-ঘর, ২৮ বছরের পুরনো দোকান, সবই। কোনও মতে প্রাণে বেঁচে যান হালিলরা। সপরিবার দেশ ছেড়ে তুরস্কে চলে যান তাঁরা। শরণার্থী হিসেবে সেখানে নথিভুক্ত হয় তাঁদের নাম। সেই দেশে বসেই শুরু হয় অন্য দেশে ঠাঁই পাওয়ার অপেক্ষা। শেষমেশ তিন বছর বাদে কানাডায় আসেন তাঁরা।
হালিল ও পরিবারের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। ৭০০০ বার শেয়ার হয়েছে তাঁর পোস্টটি। শুধু শেয়ারই নয়, অনেকেই এই গল্প পড়ে সাধুবাদ জানিয়েছেন হালিলকে।
আর কী বলছেন হালিল নিজে?
অচেনা মানুষকে সাহায্য করতে পেরে বেজায় খুশি তিনি। এক গাল হেসে বললেন, ‘‘দারুণ লাগছে। খুব খুশি হয়েছি আমি।’’ ভাষার অনুবাদ প্রয়োজন হলেও এ হাসির মানে বুঝতে গুগ্ল ট্রান্সলেটর লাগেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy