প্রতীকী ছবি।
অর্থনীতির হারল ফেরার ইঙ্গিত নেই শ্রীলঙ্কার। শনিবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, মার্চ মাসে সে দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৮.৭ শতাংশ। খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি ৩০ শতাংশের বেশি। এই নিয়ে টানা ছ’মাস ধারাবাহিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির পারদ চড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে।
এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ দানা বাঁধছে জনবিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এরই মধ্যে আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কায় ভারতের আর্থিক সাহায্যে জ্বালানি তেল আনা হয়েছে। রাজাপক্ষে সরকার জানিয়েছে, একটি জাহাজে ৪০ হাজার টন ডিজেল এসে পৌঁছেছে কলম্বো উপকূলে।
গত মঙ্গলবার বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে কলম্বো গিয়ে শ্রীলঙ্কাকে কম সুদে ১০০ কোটি ডলার (প্রায় ৭,৬০০ কোটি টাকা) ঋণ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তারই সাহায্যে আপাতত জ্বালানি সঙ্কট কিছুটা সামাল দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে ঠেকায় দু’টি জাহাজে করে বাইরে থেকে তেল এলেও, ডলারের অভাবে তা হাতে নেওয়া যাচ্ছে না বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী উদয় গমনপিলা। জ্বালানি সঙ্কটের কারণে রাজধানী কলম্বো-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে পেট্রোল পাম্পগুলিতে পড়ছে দীর্ঘ লাইন। সরবরাহ বাড়ন্ত হওয়ায় অশান্তির ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে পেট্রোল পাম্পগুলিতে নজরদারির জন্য সেনা নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। রান্নার গ্যাসের অভাবেও বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভের জেরে অশান্তি ঘটেছে।
ডিজেলের অভাবে গণপরিবহন ব্যবস্থা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কায়। পাশাপাশি পণ্য পরিবহণে প্রভাব পড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। জানুয়ারির গোড়ায় শ্রীলঙ্কায় ২৫ শতাংশ ছুঁয়ে রেকর্ড গড়েছিল মূল্যবৃদ্ধি। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্বে তলানিতে ঠেকেছিল বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার।
সে সময়ই অর্থনীতিবিদের একাংশ শ্রীলঙ্কায় আর্থিক বিপর্যয়ের ভবিষ্যবাণী করেছিলেন। মাস ঘোরার আগেই সেই পূর্বাভাস মিলে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভের পরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রের এই অর্থনীতি কখনও এমন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy