অশান্ত: ক্যান্ডির রাস্তায় সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে সেনা। মঙ্গলবার। রয়টার্স
সাম্প্রদায়িক হিংসার জেরে দশ দিনের জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। ২০১১ সালের অগস্টে শেষ বার এ দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। মঙ্গলবার সরকারি এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আপাতত হিংসা নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাহাড়ি ও পর্যটকপ্রিয় ক্যান্ডি প্রদেশে গতকাল অশান্তির সূত্রপাত। সিংহলি বৌদ্ধ ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষে দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে ৩২টি বাড়ি, ৭৫টি দোকান এবং ১০টি ধর্মস্থানের। গত সপ্তাহে জনতার হাতে এক সিংহলির মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত হচ্ছিল পরিস্থিতি। কাল ক্যান্ডির থেলডেনিয়া এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। সেনাবাহিনী এবং পুলিশ কম্যান্ডো শান্তি ফেরাতে দ্রুত এলাকায় যায়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে তারা। জারি হয় কার্ফু। তার পরেই প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপাল সিরিসেনা এবং মন্ত্রিসভা জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়। গোটা ক্যান্ডি প্রদেশেই জারি রয়েছে কার্ফু।
আজ থেকে শুরু হয়েছে ত্রিদেশীয় নিদাহাস টোয়ন্টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। আজ কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল ভারত। তবে সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, এই অশান্তি থেকে দূরে রাখা হবে ক্রিকেটকে।
সোমবার ক্যান্ডিতে বৌদ্ধ জনতার একটি দল ১১ জন মুসলিমের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সপ্তাহখানেক আগে এক বৌদ্ধের মৃত্যুর পরেই এই ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে এক দগ্ধ ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে গত এক বছর ধরে নানা টানাপড়েন চলছে বলে দাবি। বেশ কিছু কট্টরপন্থী বৌদ্ধ সংগঠনের অভিযোগ, মুসলিমরা শ্রীলঙ্কার বহু এলাকায় ধর্মান্তরণ করাচ্ছে, প্রত্ন-নিদর্শন ধ্বংস করছে। মায়ানমার থেকে শ্রীলঙ্কায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধেও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা। গত বছর নভেম্বরেও শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে এমন হিংসা ছড়িয়েছিল। তখনও কট্টর বৌদ্ধদের দিকেই আঙুল ওঠে।
এই ধরনের বিভিন্ন গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘৃণার বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে সরকারি সূত্রে দাবি। সরকারি মুখপাত্র দয়াসিরি জয়শেখর বলেছেন, ‘‘ফেসবুকের মাধ্যমে যারা হিংসা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যত্র যাতে ক্যান্ডির মতো হিংসা না ছড়ায়, তার জন্যই দ্রুত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy