যুযুধান: বরিস জনসন ও জেরেমি করবিন। এএফপি
সাধারণ নির্বাচনের আগে দু’জনে মুখোমুখি লড়লেন প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে। আর দু’জনেই তাঁদের দলের কাছে উঠে এলেন বিজয়ী হিসেবে! ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং লেবার পার্টির বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন। গত রাতে তাঁদের বিতর্ক সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল। দুই নেতার কাণ্ডকারখানায় প্রাণখোলা হাসিতে মেতেছেন দর্শকেরা।
টিভি উপস্থাপিকা জুলি এচিংহ্যাম প্রশ্ন করছিলেন দুই নেতাকে। বরিসের কাছে তাঁর প্রশ্ন ছিল, ভোটাররা কেন আপনাকে বেছে নেবে? বরিস বলেন, ‘‘আমার ট্র্যাক রেকর্ড দেখুন!’’ শুনেই হাসিতে ফেটে পড়েন দর্শকেরা। দ্বিতীয় গণভোটে ব্রেক্সিটে সায় দেবেন কি না, জুলি বারবার জানতে চান করবিনের কাছে। করবিন চুপ। তাতেও মজা পেয়েছেন দর্শকেরা।
তবে বিতর্ক জুড়ে বরিস বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মাথাব্যথা শুধু ব্রেক্সিট নিয়েই। তাই তাঁকে বিতর্কিত জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি ঘুরেফিরে চলে যান সেই ব্রেক্সিটে। বিতর্কের প্রথমটায় ব্রেক্সিট সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তরই ছিল। সেই সময়ে বরিস অনেকটা এগিয়ে ছিলেন বলে মত জনতার।
দ্বিতীয়ার্ধে করবিন বোঝানোর চেষ্টা করেন, বরিসের কনজ়ারভেটিভ পার্টি জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার বেসরকারিকরণের চেষ্টা করছে। এ সময়ে কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিতর্ক। জনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে করবিন বলেন, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে ওঁর গোপন আলোচনা চলছে। জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা ওদের কাছে বেচে দিতে চান উনি। বরিসের সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে ফেলেছে, আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবায় অবাধে মার্কিন পণ্য ঢুকবে।’’
বিরোধী নেতা জানান, তাঁদের লেবার পার্টি সরকারি পরিষেবায় বিনিয়োগ করবে এবং সরকারি ব্যয়সঙ্কোচ সামাল দেবে। তাঁর পাল্টা বরিস বলেন, ‘‘করবিনের ওই সব দাবি তাঁরই মস্তিসপ্রসূত। আমাদের সরকার কোনও অবস্থাতেই জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে বাণিজ্যিক আপসের পথে নিয়ে যাবে না।’’ বরিস প্রতিশ্রুতি দেন, ‘‘আমরা ‘জাতীয় দৈন্য’ দূর করতে বদ্ধপরিকর। লেবার পার্টি শুধু বিভাজনের কথা বলে অচলাবস্থা তৈরি করবে।’’ দর্শকদের উদ্দেশে করবিনের মন্তব্য, ‘‘লেবার চায় ব্রেক্সিটটা এমন ভাবে হোক, যাতে শেষ কথা বলে মানুষই।’’ সাধারণ মানুষের মতে, এই পর্বে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন করবিনই।
বরিস অবশ্য বেশি সময় নিয়ে ফেলছিলেন বলে বারবার তাঁকে বাধা দেন জুলি। ব্রেক্সিট, জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা, মানুষের আস্থাভাজন হওয়া, নেতৃত্বদান, স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যৎ এবং ব্রিটেনের রাজপরিবার— এ সব কিছু নিয়ে কথা বলেছেন দুই নেতা। জনসন দাবি করেন, তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চান কারণ তাতে তাঁর ব্রেক্সিট চুক্তি পার্লামেন্টে পাশ করাতে সুবিধা হবে। সে ক্ষেত্রে ৩১ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে ব্রিটেন। আর তার পরে স্থায়ী বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সম্ভব হবে। করবিন এ সময়ে বলেছেন, তিনি ব্রেক্সিট-সঙ্কট সমাধানে ছ’মাস সময় চান। ইইউ-এর সঙ্গে নয়া চুক্তি নিয়ে এগোতে চান তিনি।
বিতর্ক শেষে জনমত থেকে যেটা উঠে এল, তাতে বোঝা গেল বরিস প্রধানমন্ত্রীসুলভ আচরণই করেছেন। তবে করবিন ছিলেন মানুষের অনেকটা কাছাকাছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy