—প্রতীকী ছবি।
বিরোধী রাজনীতিকের বিরুদ্ধে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে পোল্যান্ডের শাসক দল সাংবিধানিক নীতি ভেঙেছে বলে জানাল সে দেশের আইনসভার কমিশন। তারা জানিয়েছে, পোল্যান্ডের আইন ভেঙে ওই স্পাইওয়্যার কিনেছিল শাসক দল। পেগাসাস ব্যবহারের ফলে সে দেশে ২০১৯ সালের ভোট স্বচ্ছ হয়নি বলেও মন্তব্য করেছে কমিশন। এই রিপোর্টকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বেই ফের পেগাসাসের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক নতুন ভাবে শুরু হবে বলে মত রাজনীতিকদের। ইতিমধ্যেই ভারতে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে কোনও কোনও শিবির। তাদের মতে, সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস সংক্রান্ত শুনানি শেষ বার হয়েছিল অনেক দিন আগে। এই রিপোর্টের ফলে সুপ্রিম কোর্টেরও ফের বিষয়টি নিয়ে তৎপর হওয়া উচিত।
২০২১ সালে বিশ্বের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের যৌথ তদন্তে দাবি করা হয়, কয়েকটি দেশের সরকার ইজ়রায়েলের এনএসও সংস্থার তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী রাজনীতিক, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবীদের উপরে গোপনে নজরদারি চালিয়েছে। ভারতেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর অভিযোগ ওঠে। পরে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিটি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘আমার ফোনে পেগাসাস ঢোকানো হয়েছিল, এ কথা সকলেই জানেন। তবে ঠিক কী ভাবে আমার উপরে নজরদারি চালানো হয়েছিল তা আমার জানা নেই।’’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির মধ্যে পোল্যান্ড, গ্রিস, হাঙ্গেরি ও স্পেনে পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারির অভিযোগ উঠেছিল। পোল্যান্ডের আইনসভার উচ্চকক্ষ সেনেটের তরফে এ নিয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়। গত কাল প্রকাশিত রিপোর্টে কমিশন জানিয়েছে, সেনেটের সদস্য ও বিরোধী নেতা শিস্তভ ব্রেজ়ার বিরুদ্ধে পেগাসাস ব্যবহারের ফলে ২০১৯ সালের ভোট স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়নি। কমিশনের চেয়ারম্যান মার্সিন বোসাকির মতে, ‘‘পেগাসাস নিরাপত্তা সংস্থার হাতে থাকা কোনও প্রয়োজনীয় হাতিয়ার নয়। এটা অন্য মানুষের আচরণ বদলে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত সাইবার অস্ত্র।’’ সেনেটের ডেপুটি স্পিকার মাইকেল কামিনস্কির বক্তব্য, ‘‘গত দেড় বছর ধরে যে তদন্ত করেছি তার ফল যে কোনও নাগরিককে সন্ত্রস্ত করার জন্য যথেষ্ট। এই দানবীয় অস্ত্র নাগরিকদের সুরক্ষায় ব্যবহার করা হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছিল সরকার-বিরোধীদের জব্দ করার জন্য।’’ পোল্যান্ডের শাসক দল পেগাসাস কেনার কথা আগে স্বীকার করলেও তা বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেনি।
পেগাসাসের মাধ্যমে কেবল নজরদারি নয়, কোনও ব্যক্তির কম্পিউটার ও ফোন থেকে বার্তা সরানো বা সেখানে কোনও বার্তা বা ফাইল ঢুকিয়ে দেওয়া যায় বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির যৌথ তদন্তের সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কম্পিউটার ও মোবাইল পরীক্ষা করা হয় কানাডার সিটিজ়েন ল্যাবে। ২০২২ সালে আমেরিকান সেনেটের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের গোয়েন্দা তথ্য সংক্রান্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্যে সেখানকার গবেষক জন স্কট রেলটন জানান, শিস্তভ ব্রেজ়ার ফোন-কম্পিউটারে অন্তত ৩৩ বার পেগাসাস হামলা চালানো হয়। ২০১৯ সালের ভোটের আগে বৈঠক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছিল শাসক দল। পাশাপাশি ব্রেজ়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তাঁর ফোন থেকে ‘চুরি’ করা বার্তা প্রকাশ করে দেওয়া হয়।
পোল্যান্ডের কমিশনের রিপোর্টকে ট্যাগ করে এক্স সমাজমাধ্যমে (আগে যা ছিল টুইটার) সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতার বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তৎপর হবে কি? (ভারতে পেগাসাস কেলেঙ্কারি) শেষ শুনানি হয়েছিল এক বছরেরও বেশি আগে, ২০২২ সালের ২৬ অগস্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার অবসরের আগে।’’ সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy