ছবি রয়টার্স।
তাঁকে সরাতে চেয়ে বিক্ষোভে প্রায় এক মাস ধরে উত্তাল দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশ। কঠোর হাতে সেই বিক্ষোভ দমনের জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন কাঠগড়ায় তুলেছে দেশের পুলিশ-প্রশাসনকে। অবশেষে চিলির প্রেসিডেন্ট নিজের মুখে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করলেন। গত কাল প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনিয়েরা বলেছেন, ‘‘পুলিশ বাহিনী অতিরিক্ত কঠোর ভূমিকা নিয়েছিল। তাদের দমননীতিতে একাধিক অপরাধমূলক ঘটনাও ঘটেছে। মেনে নিচ্ছি যে, গত এক মাসে মানুষের অধিকার সঠিক ভাবে রক্ষিত হয়নি।’’
আচমকা মেট্রোর অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ দিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল চিলিতে। ধীরে ধীরে সেটাই সরকার-বিরোধী গণআন্দোলনে পরিণত হয়। এক দিকে, অতিরিক্ত বিত্তশালী রাজনৈতিক নেতারা, অন্য দিকে, সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ। এই দুই শ্রেণির ক্রমবর্ধমান আর্থিক ও সামাজিক ফারাক নিয়ে ভিতরে ভিতরে ফুঁসছিলই চিলি। মেট্রোর ভাড়া বৃদ্ধি সেই আগুনেই ঘি দেয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য, প্রেসিডেন্টকে গদিচ্যুত করা-সহ একাধিক দাবিতে রাজধানী সান্তিয়াগো-সহ দেশের বিভিন্ন শহরের মানুষ পথে নামেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ২২ জনের। আহত হয়েছেন দু’হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী। আহতদের মধ্যে কমপক্ষে দু’শো জন চোখে এতটাই গুরুতর আঘাত পেয়েছেন যে, তাঁদের দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাঁরা পুলিশি অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তাঁরাও সুবিচার পাবেন। সেই সঙ্গে দেশের সংবিধান পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। ১৯৯০ সালের আগে পর্যন্ত একটা দীর্ঘ সময় সামরিক শাসন ছিল চিলিতে। তার পরে দেশে গণতন্ত্র ফেরে। কয়েক বার সংবিধান পরিবর্তিতও হয়। কিন্তু শিক্ষা বা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারি দায়িত্বের কথা এত দিন পর্যন্ত বলা হয়নি সংবিধানে। এ বার জনমতের দাবি মেনে সেটাই পাল্টানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন পিনিয়েরা। গত শুক্রবারই আইনসভার সদস্যদের একাংশ জানান, এপ্রিলে একটা গণভোটের পরিকল্পনা করছে সরকার। সেখানে মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হবে, সংবিধানে আদৌ পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে কি না। সংবিধান পরিবর্তিত হলে, সে ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন আনা উচিত, তা-ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হবে বলে জানান তাঁরা।
আরও পড়ুন: দৃষ্টিহীন পড়ুয়াকে হেনস্থা লন্ডনে, কৃষ্ণাঙ্গ বলেই কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy