সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। — ফাইল চিত্র
গোটা বিশ্ব একজোট হয়ে ইরানকে ঠেকাতে না পারলে তেলের দাম ‘অকল্পনীয় ভাবে’ বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। একটি মার্কিন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবিবার এমনটাই জানিয়েছেন সৌদির যুবরাজ। হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, সামরিক পথে নয়, এ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান চান তিনি।
সৌদি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলার পর থেকে মার্কিন প্রশাসন সৌদিদের চিরশত্রু ইরানের উপরে আরও কড়া হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আরামকো-র তেলের খনি এবং বিশ্বের সব চেয়ে বড় তেল শোধনাগার আবকাইক এবং অন্য কেন্দ্র খুরাইসে হামলার অভিযোগ ওঠে ইরানের বিরুদ্ধে। সেই সূত্রে সৌদি যুবরাজ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘ইরানকে রুখতে বাকি বিশ্ব যদি কড়া পদক্ষেপ না করে, তা হলে উত্তেজনা এমন স্তরে পৌঁছবে, যা সকলের স্বার্থের পক্ষেই বিপজ্জনক।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘দুনিয়া জুড়ে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হবে এবং আমরা জীবদ্দশায় যা দেখিনি, তেলের দাম বাড়বে এমনই অকল্পনীয় ভাবে।’’
ওই সাক্ষাৎকারে যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন জানিয়েছেন, তিনি মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর সঙ্গে একমত যে ১৪ সেপ্টেম্বরের ওই হামলায় ইরানের হাত ছিল। হামলার জেরে বিশ্ব জুড়ে তেল সরবরাহে
এক ধাক্কায় ৫ শতাংশ ঘাটতি তৈরি হয়। তবে সৌদি যুবরাজ ফের মনে করান, শান্তিপূর্ণ সমাধানই চাইছেন তিনি। কারণ, সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে বিশ্ব অর্থনীতি ধসে যাবে।
সৌদি আরব-আমেরিকা-ইউরোপ— প্রত্যেকে ওই হামলার দায় চাপিয়েছে ইরানের উপরে। ইরান অবশ্য সে অভিযোগ গোড়া থেকেই উড়িয়ে দিয়েছে। ইরান সমর্থিত হুথি জঙ্গিরা হামলার দায় নিয়েছিল।
সৌদি যুবরাজ সাক্ষাৎকারে এ-ও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে দেখা করা। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং পশ্চিম এশিয়ায় তার প্রভাবের কথা ভেবে আমেরিকার উচিত নয়া চুক্তির কথা ভাবা। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জেও দুই দেশকে কাছাকাছি আনার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
এর মধ্যেই আবার ইয়েমেনি হুথি জঙ্গিরা দাবি করেছে, ইয়েমেন-সৌদি সীমান্তে তারা সৌদি জোট বাহিনীর উপরে বড়সড় হামলা চালিয়েছে। সৌদি অফিসার-সহ সেনাবাহিনীর লোকজনের কিছু ফুটেজ প্রকাশ করে হুথি জঙ্গিরা জানিয়েছে, সৌদি সামরিক যানও ধ্বংস করেছে তারা। হুথিদের আরও দাবি, তারা জোট বাহিনীর অন্তত ৫০০ সেনাকে খুন ও জখম করেছে।
সৌদি জোট বাহিনী অবশ্য এ দাবি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি। যদি এই হামলার খবর সত্য হয়, তা হলে ইরান-ঘেঁষা হুথিদের জন্য এটা বড় ধরনের ‘জয়,’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। হুথিদের আল মাসিরা টেলিভিশন চ্যানেলে রবিবার ওই ফুটেজ সম্প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি। তাতে দেখা গিয়েছে, সর্পিল লাইন ধরে হেঁটে যাচ্ছে কিছু লোক। যাদের দেখে মনে হচ্ছে, তারা হুথিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পরনে সারং-এর মতো পোশাক যা ইয়েমেন এবং সৌদি আরবের কিছু অংশের লোকজন পরে। ক্যামেরায় এদের মধ্যে দু’জন দাবি করেছে, তারা
সৌদির লোক। অন্য একটি ফুটেজে দেখানো হয়েছে, সৌদি চিহ্ন বিশিষ্ট জ্বলন্ত গাড়ি ও অস্ত্রের ছবি। হুথিরাই সেগুলি আটক করেছে বলে জানিয়েছে। তবে এই ছবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy