আরবেই জন্ম হানার। পেশায় পাইলট। রক্ষণশীল সমাজে বড় হয়েছেন। কাছ থেকে দেখেছেন মেয়েদের পদে পদে চোখরাঙানির মুখোমুখি হতে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ১৭:৫৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
বিমানবন্দরের লাউঞ্জে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পোশাকে ঢাকা মহিলাদের ভিড়ে সাদা ইউনিফর্ম পরে হেঁটে যাচ্ছিলেন হানা মহসিন খান।
০২১৪
পরনে পাইলটের পোশাক। সাদা শার্ট, সাদা ট্রাউজার, টান টান বাঁধা চুল। ভিড়ের মধ্যে নিজেকে একটু অন্যরকমই লাগছিল তাঁর। হানা ভাবছিলেন ভাগ্যের সামান্য হেরফেরে ঠিক এইখানেই এ ভাবে আপাদমস্তক ঢেকে দাঁড়ানোর কথা ছিল তাঁরও।
০৩১৪
আরবেই জন্ম হানার। পেশায় পাইলট। রক্ষণশীল সমাজে বড় হয়েছেন। কাছ থেকে দেখেছেন মেয়েদের পদে পদে চোখরাঙানির মুখোমুখি হতে।
০৪১৪
বছর চারেক আগেও এ দেশের মেয়েরা গাড়ির চালকের আসনে বসার সাহসই পেতেন না। গাড়ি চালানো তো দূর অস্ত্। সেই আরবে হানা ঢুকলেন প্লেন উড়িয়ে। রক্ষণশীল সমাজের রক্ষকদের অনেকেই হয়তো নিশ্চিন্তে বসে ছিলেন তাঁর বিমানের আসনে।
০৫১৪
সৌদি আরবের মেয়ে হানা মহসিন বহু বছর ধরেই বাণিজ্যিক বিমান ওড়াচ্ছেন। বহু দেশ ঘুরেছেন। তবে এই প্রথম নিজের দেশে বিমান উড়িয়ে নামলেন।
০৬১৪
হানা জানিয়েছেন, দেশের মাটিতে অবতরণ করার পর তিনি যে শান্তি পেয়েছেন তা পৃথিবীর আর কোনও বিমানবন্দরে নেমে পাননি।
০৭১৪
টুইটারেও এই অনুভূতির কথা জানিয়েছেন হানা। লিখেছেন, ‘শেষ বার যখন এখানে ছিলাম, তখন মহিলাদের গাড়ি চালাতে দেওয়া হত না।’ নিজের প্লেন ওড়ানোর কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেননি হানা। তবে লিখেছেন, ‘অদ্ভুত অধিবাস্তব অনুভূতি হচ্ছে।’
০৮১৪
আরবের এই মেয়ে দেশের রক্ষণশীল বাস্তবকে অনেক পিছনে ফেলে এগিয়ে এসেছেন। এক সময়ে পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন। আরবের মহিলাদের অধিকার নিয়েও লড়েছেন দীর্ঘ দিন। হানা এক জন নারী আন্দোলন কর্মী।
০৯১৪
আরবের স্কুলেই পড়াশোনা। তবে পরে আরব ছেড়ে সপরিবারে বিদেশে চলে যান হানা। তবে আরব তাঁর পিছু ছাড়েনি।
১০১৪
দেশের মেয়েকে অনলাইনে নিলামে তুলেছিল আরবের একটি সংস্থা গিট হাব। ঘটনাটি নিয়ে জোরদার বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
১১১৪
আরবে মহিলাদের ‘সাল্লি’ বলে গালিগালাজ করা হয়। গিট হাবে ‘সাল্লি ডিল অফ দ্য ডে’ শিরোনামে নিলামে তোলা হয় ৮০ জন আরব মহিলাকে। হানা ছিলেন ওই ৮০ জন মহিলার এক জন।
১২১৪
তবে তার পরও দেশে ফেরার পর হানার প্রতিক্রিয়া দেখে বিস্মিত হয়েছেন অনেকেই, হানাকে তাঁর সাহসের জন্য কুর্নিশও জানিয়েছেন।
১৩১৪
হানা অবশ্য এখন ভারতের বাসিন্দা, দিল্লিতে থাকেন। ভারতের একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলট তিনি। কিছু দিন আগে পুজোর সময় ঘুরে গিয়েছেন কলকাতাতেও।
১৪১৪
এক বাঙালি বন্ধুর বাড়ির পুজোয় এসেছিলেন। অষ্টমীর সকালে শাড়িও পরেছিলেন হানা। ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, কলকাতায় এসে মুসলিমদের দুর্গাপুজো করতে দেখে দারুণ লেগেছে আমার। আমি এই একতায় মুগ্ধ। এই ভারতের জন্যই গর্ববোধ করি।