Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Abandoned baby

Abandoned Baby: সমকামী যুগলের সন্তান! পাতালপথে কুড়িয়ে পাওয়া শিশু এখন একুশের তরুণ

ড্যানির কথায়, ‘‘দেরি হয়ে গিয়েছে বলে হন্তদন্ত হয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়ে, কী একটা পড়ে রয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম, কাপড়ে মোড়া পুতুল।’’

কেভিন তাঁদের জীবনের গতিপথটা বদলে দিল।

কেভিন তাঁদের জীবনের গতিপথটা বদলে দিল। ফেসবুক থেকে নেওয়া

সংবাদ সংস্থা
চেলসি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৫৬
Share: Save:

দু’জনে তখন চুটিয়ে প্রেম করছেন। বিয়ে করবেন কবে, কোনও ঠিক নেই। কারণ বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা কই? দু’জনের মাথায় রয়েছে শিক্ষাঋণের বোঝা। তবু দেখা-সাক্ষাৎ, রাতে একসঙ্গে সস্তার কোনও রেস্তরাঁয় নৈশভোজ— এ ভাবেই কাটছিল ড্যানি স্টুয়ার্ট ও পিট মার্কিউরিওর দিন। কিন্তু, নিউ ইর্য়কের সাবওয়ে থেকে পাওয়া একটি শিশু তাঁদের জীবন বদলে দিল।

২০০০ সালের ২৮ আগস্ট। অন্য দিনের মতো ড্যানি স্টুয়ার্ট প্রেমিক পিট মার্কিউরিও-এর সঙ্গে নৈশভোজের জন্য বেরিয়েছিলেন। চেলসি-র ফরটিন্থ স্ট্রিট স্টেশন-এ নেমে ড্যানি ভূগর্ভস্থ পথ ধরে হাঁটছিলেন। ড্যানির কথায়, ‘‘দেরি হয়ে গিয়েছে বলে হন্তদন্ত হয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়ে, কী একটা পড়ে রয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম, কাপড়ে মোড়া পুতুল। কোনও শিশু বোধ হয় ফেলে গিয়েছে।’’

ভূগর্ভস্থ পথের সিঁড়ি দিয়ে উঠে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন ড্যানি। তবু কী মনে হল, ঘুরে তাকালেন। দেখলেন কাপড়ের মধ্যে বেরিয়ে থাকা পা নড়ছে। ড্যানি বলেন, ‘‘তার গায়ে কোনও জামা ছিল না। কাপড় জড়ানো। নাভির কর্ড ভাল করে কাটা হয়নি। সদ্যজাতের বয়স হয়তো ঘণ্টাখানেক হবে।’’ বিস্ময়ে হতবাক ড্যানি। কেন একরত্তিকে এই ভাবে ছেড়ে গেল তার মা বুঝতে পারছেন না। চিৎকার করে যাত্রীদের পুলিশকে ডাকাতে বলছিলেন। কেউ আমল দিচ্ছিলেন না। অবশেষে এক মহিলা আসেন। কিন্তু, তিনি ইংরেজি বোঝেন না।

শেষমেশ তাঁকে দেখতে বলে নিজেই ৯১১ ডায়াল করে পুলিশকে জানান বিষয়টি। ড্যানি বলেন, ‘‘প্রথমে পুলিশও বিশ্বাস করেনি। ভেবেছিল ভুয়ো ফোন।’’ বাধ্য হয়ে প্রেমিক পিটকে ফোন করেন ড্যানি। পিট তাঁর কথা বিশ্বাস করেন। ছুটে আসেন সাবওয়েতে। ততক্ষণে পুলিশ এসেছে। তাঁরাই স্থানীয় হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে যান।

কেভিন বড় হয়েছে। কলেজে পড়ছে। একুশের তরুণ।

কেভিন বড় হয়েছে। কলেজে পড়ছে। একুশের তরুণ। ছবি-সংগৃহিত

ঘটনার পরিসমাপ্তি হয়তো এখানেই হয়ে যেতে পারত। কিন্তু, তিন মাস পর ওই শিশু উদ্ধার সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে দু’জনকে বিচারক ডাকেন। শুনানিতে বিচারক বলেন,‘‘আপনারা কি শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী?’’ দু’জনেই সম্মতি জানান। বিচারক তাঁদের দত্তক নেওয়ার অনুমতি দেন। স্থায়ী রোজগার নেই, মাথার উপর ঋণের বোঝা, কী করে শিশুটিকে বড় করে তুলবেন— এ সব প্রশ্ন মাথায় থাকলেও শিশুটির কথা ভেবে দু’জনে দত্তক নিতে রাজি হয়ে যান। সদ্যোজাতের নাম দেন 'কেভিন'।

কেভিন তাঁদের জীবনের গতিপথটা বদলে দিল। দু’জনে বিয়ে করলেন। সংসার পাতলেন। ড্যানি ও পিটের প্রতিবেশী বন্ধুরাও এগিয়ে এলেন শিশুটিকে মানুষ করতে তাঁদের সাহায্যের জন্য। কেভিন বড় হয়েছে। কলেজে পড়ছে। একুশের তরুণ। তাঁকে ঘিরেই পিট ও ড্যানির জীবন। গত বছর তাঁদের এই জীবনের গল্প নিয়ে একটি বই লিখে ফেলেছেন তাঁরা। নাম ‘আওয়ার সাবওয়ে বেবি’। এই বইকে তাঁরা বলছেন, ছেলেকে লেখা ‘ভালবাসার চিঠি’। ড্যানি বলেন, ‘‘ছোট থেকে আমরা কোনও দিন তাকে বলিনি, তোমায় কুড়িয়ে পেয়েছি। বলেছি, তোমার মা তোমায় ওই জায়গায় রেখে গিয়েছিলেন যাতে আমরা তোমায় পাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Abandoned baby new york
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE