পুরোদস্তুর অস্ত্র মহড়া শুরু করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে সেনা পাঠিয়ে তিনি বলেছিলেন, এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ। পড়শি দেশের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করে ‘আশ্বাস’ দিয়েছিলেন, যুদ্ধ প্রস্তুতি নয়, এ নেহাতই মহড়া। তার পরে বিদেশের মাটিতে সেনা ব্যবহার করা যাবে, পার্লামেন্টের কাছ থেকে এই আশ্বাস পাওয়ার পরে আজ পুরোদস্তুর পরমাণু অস্ত্র মহড়া শুরু করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ বার আর কোনও রাখঢাক না-করেই বললেন, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতির জন্য সামরিক ভাবে তৈরি রয়েছে রাশিয়া। নাগরিকদের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের সেনাবাহিনী সব কিছু করতে প্রস্তুত।’’ পুতিনের কথায় ও কাজে আজ স্পষ্ট হয়ে গেল— আমেরিকা-সহ বিভিন্ন ‘শক্তিধর’ দেশ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও আপাতত মাথা নোয়াচ্ছে না ক্রেমলিন।
পার্লামেন্টের সবুজসঙ্কেত পাওয়ার পরেই বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্দার লুকাশেঙ্কোকে পাশে নিয়ে আজ মস্কোয় বসে কম্পিউটারে পরমাণু অস্ত্র মহড়া দেখেন রুশ প্রেসিডেন্ট। জানা গিয়েছে, রুশ বাহিনীর জাহাজ, বিমান এবং ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু অস্ত্রের মহড়া চলছে। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, জল ও স্থল থেকে নির্ভুল দক্ষতায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সফল হয়েছে পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম হাইপারসনিক ও ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি।
কাল কয়েকটি রুশ ব্যাঙ্ক ও কয়েক জন ধনী রুশের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার পরে আজ বরিস জনসন জানান, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্যও করবেন তাঁরা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার অব্যবহিত পরেই ফের সাইবার হানার শিকার হয় ইউক্রেন। বেশ কিছু ক্ষণের জন্য কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন সরকারি দফতর ও ব্যাঙ্কে। বিশেষ করে বিদেশ মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের সাইট হ্যাক করা হয়। দিন কয়েক আগেও সাইবার হানার শিকার হয়েছিল ভোলোদিমির জ়েলেনস্কির দেশ। তখন মস্কো দাবি করেছিল, এই হামলায় তাদের কোনও হাত নেই। আজ অবশ্য এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেনি মস্কো। এ দিকে, ইটালির বিদেশমন্ত্রী লুইগি ডি মাইয়ো আজ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে আর্থিক অনুদান পাঠাতে পারেন তাঁরা।
নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ মেনেই আজ থেকে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে ইউক্রেনে। যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ২ লক্ষ সেনাকে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরও অনেক বাড়ানো হয়েছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষদের দাবি, শুধু সেনা নয়, সীমান্তে ‘বডি ব্যাগ’ জড়ো করতে শুরু করেছে রাশিয়া। মৃতদেহ স্থানান্তরিত করার জন্য এই ধরনের প্লাস্টিকের ‘বডি ব্যাগ’ ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তা পরিষদের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের কাছে খবর যে, ৪৫ হাজার ব্যাগ সীমান্তে এনে রেখেছে রুশ সেনা। আধিকারিকের কথায়, ‘‘তার মানে ৪৫ হাজার রুশ সেনাকে বলি দিতে প্রস্তুত রয়েছেন পুতিন।’’ কাল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন সীমান্তে বিপুল পরিমাণ রক্ত মজুত করছে রুশ সেনাবাহিনী।
আজ কিভ থেকে তাদের সব দূতাবাস কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে ক্রেমলিন। যা দেখে অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট স্কট মরিসনের আশঙ্কা, ‘‘২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কিভের উপরে হামলা চালাতে পারে মস্কো।’’ একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিব লিজ় ট্রাস। তবে আজও পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেন-সমস্যার ‘কূটনৈতিক সমাধান’ খুঁজতে রাজি আছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy