দক্ষিণ ইউক্রেনের মিকোলিভে রুশ গোলাবর্ষণের জেরে ভেঙে পড়েছে একটি বাড়ি। বৃহস্পতিবার। ছবি রয়টার্স।
ফের কিভ আক্রমণ করল রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ গত জুন মাস থেকে শান্তই ছিল। সম্প্রতি রাশিয়া-ক্রাইমিয়া সংযোগকারী সেতুতে ট্রাক-বিস্ফোরণ ঘটে। রাশিয়ার সন্দেহ, ইউক্রেনের সরকার খোদ জড়িত রয়েছে এই কাজে। তার পর থেকেই ইউক্রেন জুড়ে রুশ হামলা বেড়েছে। কিভে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হানা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি এক সকালে ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে ইউক্রেনে। দু’দিন শান্ত থাকার পর আজ ফের কিভ অঞ্চলের একটি শহরে এসে পড়েছে ইরানের তৈরি ‘কামিকাজ়ে ড্রোন’।
ইউক্রেন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কিভের পশ্চিমে একটি ছোট শহর মাকারিভে সরকারি পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ড্রোন হামলায়। কিভ পুলিশের প্রধান আন্ড্রে নেবিটোভ বলেন, ‘‘বহিরাগত শত্রুরা সারা রাত ধরে বোমাবর্ষণ করেছে মাকারিভে। এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর অবশ্য নেই।’’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতরের উপপ্রধান কিরিলো টিমোশেঙ্কো জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পরিকাঠামোয় কামিকাজ়ে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। গত সপ্তাহেও ইরানের তৈরি শাহিদ-১৩৬ ড্রোন হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। তবে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করার কথা অস্বীকার করেছে ইরান। ক্রেমলিন কোনও মন্তব্য করেনি। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, দক্ষিণে ছ’টি কামিকাজ়ে ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। সেগুলি যে ইরানের তৈরি, তারা নিশ্চিত।
মিকোলিভেও হামলা চলেছে। দক্ষিণ ইউক্রেনের এই শহরে রাতভর ব্যাপক গোলাবর্ষণ চলেছে। মেয়র ওলেকজ়ান্ডার সেনকেভিচ জানিয়েছেন, দুই বাসিন্দা মারা গিয়েছেন। এক ৩০ বছর বয়সি যুবক ও ৮০ বছরের এক বৃদ্ধা। এক বালককে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১১ বছরের বাচ্চাটি ছ’ঘণ্টা চাপা পড়েছিল।
আজ রাশিয়া আবার দাবি করেছে, তাদের দেশে গোলাবর্ষণ করেছে ইউক্রেন। দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার বেলগোরোডের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকোভ জানান, সীমান্তের কাছে একটি আবাসনে ইউক্রেনের গোলা এসে পড়ে। বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, স্থানীয় স্কুলের মাঠে ইউক্রেনের সেনা নেমেছিল। কোনও পড়ুয়া সেই সময় মাঠে ছিল না।
রাশিয়াকে হারাতে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থসাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমেরিকা। ব্রিটেনও জানাল, তারা ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠিয়ে যাবে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালেস জানান, ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য পশ্চিমি জোটের কখনওই অস্ত্র কম পড়বে না। বেন বলেন, ‘‘রাশিয়ার মতো অবস্থা নয়। ওরা ইতিমধ্যেই নিজেদের একঘরে করে ফেলেছে। পশ্চিম প্রয়োজনে অস্ত্রের নতুন উৎস তৈরি করবে। আর সেটা আমরা ইতিমধ্যেই করছি।’’
ক্রেমলিন আজ ফের জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনে সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত বদলাবে না। কিন্তু সমঝোতা করতে রাজি। তবে যুদ্ধ-বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, ইউক্রেন কোনও ভাবেই সমঝোতার পথে হাঁটবে না। তুরস্ক মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে দু’দেশের মধ্যে। নেটোর সদস্য এই দেশ কিভ ও মস্কো, দু’পক্ষেরই বন্ধু। আজ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেস তাইপ এর্ডোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে ইউক্রেন নিয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও কথা হয়নি। ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের জন্য তুরস্ককে গ্যাস-হাব করার পরামর্শ দিয়েছেন পুতিন। তিনি জানিয়েছেন, তুরস্কের মধ্যে দিয়ে পথ হলে, তা রাশিয়ার জন্য ভরসার হবে। শস্য সরবরাহ নিয়েও কথা হয়েছেদু’পক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy