সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন (এসসিও)-র মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মস্কোয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।
রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক এ কে (অ্যাসল্ট কালাশনিকভ) ২০৩ রাইফেল তৈরির কারখানা হবে উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে। শুক্রবার মস্কোয় রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে রাজনাথ সিংহের বৈঠকে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। পাশাপাশি কৌশলগত সহযোগী দেশ ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নটি বিবেচনা করে পাকিস্তানকে অস্ত্র বিক্রি না-করার আশ্বাস দিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও জঙ্গিপনায় মদতের অভিযোগে মস্কোর কাছে এই আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি।
সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন (এসসিও)-র মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে কাল মস্কো এসেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আটটি সদস্য দেশের মধ্যে ভারত, রাশিয়া, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তান ছাড়া রয়েছে চিন এবং পাকিস্তানও। লাদাখে চিনের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফংহ-কে দর্শকাসনে বসিয়ে এ দিন নিজের বক্তৃতায় রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিপদ সম্পর্কে বিশদ চর্চা করেন রাজনাথ। চলতি বছরে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের ৭৫তম বর্ষ— সে কথা উল্লেখ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন যে কী ভয়ানক ধ্বংস ডেকে আনে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আমাদের সেই শিক্ষা দিয়েছে।’’ পারস্পরিক আস্থার সম্পর্কই যে আগ্রাসনকে আটকাতে সক্ষম, তা-ও বলেছেন তিনি। রাজনাথ বলেন, ‘‘এসসিও-র সদস্য দেশগুলির জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। এই এলাকার বাসিন্দারা শান্তি, নিরাপত্তা, বিশ্বাস ও সহযোগিতার সম্পর্ক দাবি করেন। তাঁদের সেই আকাঙ্ক্ষাকে স্বীকার করে নিয়ে দেশগুলির মধ্যে শ্রদ্ধা, আস্থা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন ও প্রথাগুলি যাতে মেনে চলা হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’
যে কোনও ধরনের চরমপন্থা ও সন্ত্রাস যে ভারত বিরোধী, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের এক বার ‘দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে’ তা ঘোষণা করে কার্যত পাকিস্তানের দিকেই বাকিদের নজর ঘোরালেন রাজনাথ। তিনি জানান, অনেক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেও ভারত এই দুই প্রবণতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। সাইবার দুনিয়ায় চরমপন্থী ও মৌলবাদী ভাবধারার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এসসিও-র ‘অ্যান্টি-টেররিজ়ম স্ট্রাকচার’ ভাল কাজ করছে বলেও জানান রাজনাথ। বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের আবহে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের জন্য রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের সাধুবাদও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ২০২১-এর মাঝামাঝির আগে ব্যাপক হারে কোভিড টিকা আসার সম্ভাবনা কম: হু
আরও পড়ুন: রান্নার গ্যাসে নামমাত্র ভর্তুকি, নিশানায় কেন্দ্র
সম্মেলনের বাইরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে রাজনাথের এ দিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অমেঠীতে নতুন কারখানা গড়ে আধুনিক এ কে ২০৩ রাইফেল তৈরির বিষয়টি অনেকটা এগিয়েও আটকে ছিল মূলত দাম নিয়ে মতভেদের কারণে। এ দিন ঠিক হয়েছে, দাম নির্ণয়ের জন্য দুই দেশ একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করবে। তার আগে কারখানার কাজ এগোক। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি, পাকিস্তানকে অস্ত্র বিক্রি না-করার যে আশ্বাস রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ দিন দিয়েছেন, তাতে বেশ সন্তুষ্ট দিল্লি। চিন-ভারত উত্তেজনা কমাতে রাশিয়া আড়াল থেকে দৌত্য করছে। গালওয়ান ও লাদাখের অন্য এলাকায় চিন যে বোঝাপড়া অমান্য করে সেনা ও গোলাবারুদ মোতায়েন করে উত্তেজনা সঞ্চার করছে, রাশিয়ার কাছে সে বিষয়টি সবিস্তার জানান রাজনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy