সাইবার দস্যুকুলে এটি হীরক রাজার মগজ ধোলাই যন্ত্রের মতোই! প্রাণে মারে না। গারদের ধার ধারে না... শুধু মগজ ধোলাই করে দেয়। মন্ত্র বুনে দেয় ফজল মিয়ার মতো সিধেসাদা, সুরক্ষায় পিছিয়ে থাকা কম্পিউটারের মগজে। যাতে সে দস্যুর প্রভুর গুণ গায়। তার কথা মতো চলে।
বিশ্ব জুড়ে ত্রাস ছড়িয়েছে যে ওয়ানাক্রাই ভাইরাস, দাপটে এ তার বড়দা, বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা। এর নাম দিয়েছেন ‘ইটারনালরকস’। ওয়ানাক্রাই-এ হ্যাকাররা আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-র ‘ডাবলপালসার’ কোড ব্যবহার করেছে। এটিতে রয়েছে এনএসএ-রই ইটারনালচ্যাম্পিয়ন, ইটারনালরোমান্স-এর মতো ৬টি বিশেষ কোড। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ওয়ানাক্রাই-এর চেয়ে এটি ঢের বেশি বিপজ্জনক। বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে, যেখানে বহু কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমেই সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কোড জোড়া থাকে না বা ‘আপডেট’ করা থাকে না। ওয়ানাক্রাইয়ের মতো ওই দুর্বলতার ছিদ্র দিয়েই হানা দিতে পারে ‘ইটারনালরকস’।
ওয়ানাক্রাই ১০ দিনে দেড়শোটি দেশের অন্তত ২.৪ লক্ষ কম্পিউটারে ঢুকে ফাইল আটক করেছে মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে। ভারতের ৪৮ হাজার কম্পিউটারে এটি হানা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। যার ৬০% কোনও সংস্থার। বাকি ৪০% ব্যক্তিগত কম্পিউটার। এটির কোডে তা-ও কিছু দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যার ভিত্তিতে এর মোকাবিলা করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু ‘ইটারনালরকস’-এ সেই দুর্বলতা নেই। এরা শুধু চুপিসারে ঢুকে ঘাপটি মেরে বসে থাকে প্রভুর নির্দেশের অপেক্ষায়। ভবিষ্যতে হ্যাকাররা ওই ‘ইটারনালরকস’ ভাইরাসের মাধ্যমেই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নিতে পারে এবং তাদেরই মর্জিমাফিক কাজ করতে থাকে কম্পিউটার। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ভারতীয় সাইবার সুরক্ষা সংস্থা সিইআরটি-র বিশেষজ্ঞদের যা বেশি ভাবাচ্ছে তা হল, নতুন এই বিপদটির ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা ওয়ানাক্রাই-এর চেয়ে অনেক বেশি। রোখার পথও অজানা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy