Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Oxford

অক্সফোর্ড নিয়েও আশার আলো

গত কালই ল্যানসেট পত্রিকায় এই প্রতিষেধকের অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়াল সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share: Save:

মাত্র এক দিন আগেই ফাইজ়ার-বায়োএনটেক-এর তৈরি টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। এ বার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি করোনাভাইরাস প্রতিষেধকটিও ভাল কাজ করছে বলে জানালেন এক দল গবেষক।

গত কালই ল্যানসেট পত্রিকায় এই প্রতিষেধকের অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়াল সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, অক্সফোর্ডের তৈরি এই প্রতিষেধকটি প্রায় ৭০ শতাংশ কার্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ কার্যকর যে কোনও টিকাকেই ছাড়পত্রের অনুমতি দিয়ে রেখেছে। তবে অক্সফোর্ডের টিকা এখনও ব্যবহারের ছাড়পত্র পায়নি। ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক রিপোর্টে অবশ্য জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, করোনা সংক্রমণ রোধে এই টিকা বিশেষ কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে। সেই সঙ্গে অসুস্থতা ও মৃত্যুর হাত থেকেও মানুষকে রক্ষা করছে।

আরও পড়ুন: জরুরি ভিত্তিতে টিকা ব্যবহারের আবেদন, ছাড়পত্র নয় এখনই

অক্সফোর্ডের তৈরি এই টিকা প্রথম থেকেই গোটা বিশ্বে বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। টিকা প্রস্তুতকারীরা দাবি করেছিলেন, এই টিকা শুধু কার্যকরই নয়, অন্যান্য যে সব প্রতিষেধক বাজারে ছাড়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তাদের তুলনায় অনেক সস্তাও। কিন্তু সপ্তাহ দু’য়েক আগে একটি রিপোর্টে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছিল। আসলে পরীক্ষার একটি পর্যায়ে মোট তিন ভাগে এই টিকার কার্যকারিতা সামনে এসেছিল। সামগ্রিক ভাবে ৭০ শতাংশ। যাঁদের দু’টি করে ডোজ় দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ। এবং পরিকল্পিত মাত্রার অর্ধেক ডোজ় যাঁরা পেয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ। দেখা যায়, ‘ভুল করে’ যাঁদের কম ডোজ় দেওয়া হয়েছে, সেটিই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ল্যানসেটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মোট ১৩৬৭ জনকে একটা গোটা ডোজ় দেওয়ার পরে অর্ধেক ডোজ় দেওয়া হয়েছিল, যাঁদের ক্ষেত্রে টিকা ৯০ শতাংশের উপরে কাজ করেছে।

আরও পড়ুন: বাবুল সুপ্রিয়র মাতৃবিয়োগ

তা ছাড়া যাঁদের এই টিকা পরীক্ষামূলক ভাবে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকের বেশি মাত্রায় জ্বরও এসেছিল। তবে তাঁদের বেশির ভাগই এখন সুস্থ এবং ট্রায়ালে অংশও নিচ্ছেন।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই টিকা আদৌ সুরক্ষিত কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। কারণ যে ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে এই টিকা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই বয়স ৫৫-র নীচে। অথচ করোনায় কাবু হচ্ছেন সবেচেয়ে বেশি বয়স্করাই। এই সব দিক সামলে এই টিকাকে আদৌ ছাড়পত্র দেওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে ল্যানসেটের সাম্প্রতিক রিপোর্টে সেই আশঙ্কা অনেকটাই দূর হয়েছে। উপসর্গহীনদের থেকেও এই টিকা সুরক্ষা দিচ্ছে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি ফাইজ়ারের টিকার সঙ্গে অক্সফোর্ডের টিকা মিশিয়ে তা আরও শক্তিশালী করে তোলা হবে কি না, তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা চলছে।

অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সিইও পাস্কাল সোরিয়ট বলেছেন, ‘‘আমাদের তৈরি টিকা যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায়, তার জন্য বিভিন্ন দেশের কাছে রিপোর্টগুলো পাঠাচ্ছি। কারণ এই টিকা যাঁদের দেওয়া হয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও বাড়াবাড়ি রকমের অসুস্থতা বা হাসপাতালে ভর্তি করার মতো অবস্থা হয়নি।’’ সংস্থার এগ্‌জ়িকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মেনে পাঙ্গালোস দাবি করেছেন, শুধু অল্পবয়সিদের জন্যই নয়, এই টিকা সব বয়সি মানুষের জন্যই সমান কার্যকর। ছাড়পত্র পেলে এই প্রতিষেধক অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরাও।

আজই আবার কানাডা সরকার ফাইজ়ারের টিকায় ছাড়পত্র দিয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই সেখানে এই টিকা দেওয়া শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই টিকার প্রথম দফার ডোজ় আজ পৌঁছে গিয়েছে ইজ়রায়েলেও।

অন্য বিষয়গুলি:

Oxford Corona Vaccine AstraZeneca
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy