বাংলাদেশে রেলের একাধিক প্রকল্প থমকে রয়েছে। দাবি, ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি। এখনও ঋণ দেওয়া হয়নি বাংলাদেশকে। সেই কারণেই ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়নি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, ছ’বছর আগে বাংলাদেশ রেলের একাধিক প্রকল্পের জন্য ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু এখনও সেই টাকা আসেনি। টাকা চেয়ে একাধিক বার নয়াদিল্লিকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি রেল মন্ত্রণালয়ের।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে রেলের মোট সাতটি প্রকল্প রয়েছে, যেগুলির কাজ ভারতের ঋণের টাকায় হওয়ার কথা। তার মধ্যে খুলনা-দর্শনা যুগ্ম লাইন রেল প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মিশ্র গেজ় লাইন প্রকল্পের জন্য অনুমোদন মেলে ২০১৮ সালে। ভারত এই দুই প্রকল্পের জন্য ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে দাবি সে দেশের রেল মন্ত্রকের। কিন্তু ঋণ না-পাওয়ায় এখনও কাজ শুরু করা যায়নি। এ ছাড়া, ভারতের ঋণের টাকায় দু’টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইনের কাজ এগিয়েছে ৩৮ শতাংশ। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ নির্মাণের কাজ এগিয়েছে ৫১ শতাংশ। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ওই সময়ে অস্থির পরিস্থিতির কারণে এই রেল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় শ্রমিকেরা দেশে ফিরে এসেছিলেন। বাংলাদেশ রেলের দাবি, তাঁরা অনেকেই এখনও বাংলাদেশে যাননি। ফলে এই দুই প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছে মাঝপথে।
আরও পড়ুন:
এ ছাড়া ভারতের ঋণের টাকায় বাংলাদেশে খুলনা-মোংলা রেলপথ এবং আখাউড়া-আগরতলা লাইনের কাজ হয়েছে। কিন্তু এখনও এই দুই প্রকল্পের পুরোপুরি সমাপ্তি ঘোষণা হয়নি। খুলনা-মোংলা লাইনে একটি ট্রেন চলে। আখাউড়া-আগরতলা লাইনে এখনও ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। আরও একটি প্রকল্পের জন্য টাকা দিয়েছে ভারত। দিনাজপুর-কাউনিয়া লাইনের কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ রেল সূত্রকে উল্লেখ করে প্রথম আলো জানিয়েছে, ঢাকা-টঙ্গী এবং কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রকল্পের জন্য ভারত আদৌ টাকা দেবে কি না, তা জানতে চেয়ে গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে কোনও উত্তর আসেনি। অনেকে মনে করছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতের কাছ থেকে টাকা না-ও পাওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প খুঁজবে ঢাকা।
বাংলাদেশ রেল সূত্রে দাবি, ২০১৮ সালে এই দুই প্রকল্পের জন্য যে পরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা হয়েছিল, বর্তমানে তার খরচ আরও বেড়ে গিয়েছে। ভারতকে সে কথা জানিয়ে দু’বার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপাতত অর্থের অভাবে ওই দুই প্রকল্প আটকে আছে।