এক অর্থবছরে ভারতে মোট সাতটি প্রকল্পের জন্য টাকা দিয়েছে আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)। তেমনটাই উল্লেখ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্টে। কোন কোন খাতে অনুদান এসেছে, মোট কত টাকা এসেছে, তার হিসাব দেওয়া হয়েছে ওই রিপোর্টে। কেন্দ্রের রিপোর্টে দাবি, যা নিয়ে এত বিতর্ক, সেই ভোটের হার বৃদ্ধির খাতে কোনও মার্কিন অনুদান আসেনি। সাতটি প্রকল্পের মোট খরচ ৭৫ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকা)। তার মধ্যে আমেরিকার সংস্থা ন’কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৪০ কোটি টাকা) দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। তাতে যে সাত প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, সেগুলি হল— কৃষি ও খাদ্যসুরক্ষা কর্মসূচি, জল-পরিচ্ছন্নতা-স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্প, বিপর্যয় মোকাবিলা, স্বাস্থ্য, বন ও জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্প, শক্তির কার্যকারিতা ও প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণ প্রকল্প (এনার্জি এফিশিয়েন্সি টেকনোলজি কমার্শিয়ালাইজ়েশন) এবং উদ্ভাবন (ইনোভেশন) প্রকল্প।
ভারতের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য আমেরিকার অনুদান গ্রহণ শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সাল থেকে। মূলত মার্কিন সরকারের ইউএসএইড বিভাগ এই তহবিল পরিচালনা করে থাকে। অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ১৯৫১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত আমেরিকার এই সংস্থা ভারতে ৫৫৫টি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থসাহায্য করেছে। মোট সাহায্য এসেছে ১,৭০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা)।
সম্প্রতি ভারতের একটি খাতে অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। দাবি, ভারতের নির্বাচনগুলিতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৮২ কোটি টাকা) অনুদান দেওয়া হত। পূর্বতন জো বাইডেন প্রশাসন এই অনুদান অনুমোদন করেছিল বলে ট্রাম্পের দাবি। তিনি এই অনুদান বাতিল করে দিয়ে জানান, ভারত উচ্চ হারে কর নিয়ে থাকে। তাতে আমেরিকার বাণিজ্যে সমস্যা হয়। ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য আমেরিকা বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়, বুঝিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই ১৮২ কোটির অনুদানকে তিনি ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভারতের তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের প্রশাসন যে তথ্য দিচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। ভারত সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। কেন্দ্রের রিপোর্টে ভোটের হার বৃদ্ধির খাতে কোনও মার্কিন অনুদানের উল্লেখ দেখা গেল না।