Advertisement
E-Paper

প্রায় ধ্বংস রাফা, ইজ়রায়েলি হামলা চলছেই

১২ হাজার বর্গমিটার এলাকা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। মানুষের ঠাঁই খোলা আকাশের নীচে। ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। খাবার নেই, পানীয় জল নেই।

ইজ়রায়েলি হামলায় প্রায় ধ্বংস রাফা শহর।

ইজ়রায়েলি হামলায় প্রায় ধ্বংস রাফা শহর।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২২
Share
Save

যত দূর দেখা যায়, মাইলের পর মাইল... কঙ্কালসার চেহারা নিয়ে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য কালো, পোড়া, ভাঙাচোরা বাড়ি। নিষ্প্রাণ কিছু মুখ সেই ‘মৃত্যু উপত্যকায়’ খুঁজে চলেছে বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশাটুকু। দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ডের রাফা অঞ্চলের এমন বেশ কিছু ছবি ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে, ইজ়রায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে রাফার ৯০ শতাংশ বসতবাড়ি। তাদের কথায়, ‘‘গণহত্যা, কোনও জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ নিদর্শন তৈরি করেছে ওরা।’’

১২ হাজার বর্গমিটার এলাকা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। মানুষের ঠাঁই খোলা আকাশের নীচে। ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। খাবার নেই, পানীয় জল নেই। ২২টি জলের উৎস (ওয়াটার ওয়েল) ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিস্রুত পানীয় জলের জোগান নেই। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বলতেও কিছু আর নেই। নোংরা-আবর্জনায় ভরে গিয়েছে এলাকা। সেই সঙ্গে পচাগলা দেহাংশ। জটিল রোগ সংক্রমণের ভয় পাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। এর মধ্যে রাফার ১২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটাও আর কাজ করছে না। আবু ইউসেফ আল-নাজ়ার হাসপাতালও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিস্ফোরক রোবট ব্যবহার করে এই হাসপাতালটি ধ্বংস করে দিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। আটটি স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ভয়ানক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। শতাধিক মসজিদ রয়েছে রাফায়। তার সবই হয় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, নয়তো আধভাঙা অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি বন্ধ হওয়া ইস্তক গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজ়া ভূখণ্ডে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, গাজ়াকে জঙ্গি-মুক্ত করেই ছাড়বেন তিনি। অতএব... হত্যা চলবে। ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ৫০,৬৯৫ জন প্যালেস্টাইনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। সংখ্যাটা আরও বেশি হলেও আশ্চর্যের কিছু নেই। কমপক্ষে ১ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ জখম। ইজ়রায়েলের দাবি নিহত ৫০ হাজারের মধ্যে ২০ হাজারই জঙ্গি।

গাজ়ার একটা বড় অংশ দখল করার পরিকল্পনাও জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। লক্ষ্যপূরণে এলাকার পর এলাকা সাফাই (হত্যাকাণ্ড) চলছে। রবিবার যেমন ভোররাতের অন্ধকারে গাজ়ার খান ইউনিসে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ঘুমের মধ্যেই ১৫ জন মারা গিয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ জন মহিলা ও শিশু। একটি বসতবাড়ি ও তার আশপাশের বেশ কিছু অস্থায়ী ছাউনি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে এক সাংবাদিকও রয়েছেন। খান ইউনিসের এক বাসিন্দা মহম্মদ আবু উদা জানান, আজ সকালে তাঁর বাড়ির উপরে ভেঙে পড়ে পাশের বাড়ি। তাতেই ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। কোনও মতে পালান। তিনি বলেন, ‘‘একটা প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ। গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। প্রতিবেশীদের খুঁজতে গিয়ে পাই টুকরো টুকরো দেহাংশ... পাশের বাড়িটা এখন লোহা-পাথরের স্তূপ। আর আগুনে পুড়ে যাওয়া কিছু স্মৃতি।’’ সংবাদ সংস্থা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rafah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}