বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে ভাঙচুর বিক্ষোভকারীদের। মঙ্গলবার। রয়টার্স
প্রধান ফটক ভেঙে ফেলা হয়েছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে রিসেপশন। বুলেটপ্রুফ দেওয়াল এবং তাতে লাগানো কাচের জানলায় লোহার রড নিয়ে একের পর এক ধাক্কা। বাইরেও আগুন। ইরাকের সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে এ ভাবেই চড়াও হলেন মঙ্গলবার। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে চলল গুলি আর কাঁদানে গ্যাস।
এর আগে এ ভাবে সোজা মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে কেউ বিক্ষোভ দেখাতে পারেনি বলেই দাবি প্রশাসনের। কারণ এলাকাটি কড়া নিরাপত্তায় মোড়া। অসংখ্য চেক-পোস্ট পেরিয়ে গ্রিন জ়োনের মধ্যে দূতাবাসের ঠিকানা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনার দায় চাপিয়েছেন ইরানের উপরে। তিনি বলেছেন, ‘‘ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে হামলায় পুরোপুরি মদত দিচ্ছে ইরান।’’
বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ প্রথমে দূতাবাসের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে বসে পড়েছিল। দূতাবাসের ভবনের পার্কিং লটের কাছেই রিসেপশন। দূতাবাসের দেওয়াল বেয়ে ঢুকে সেখানে বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। তবে দলের মধ্যে থেকেই মাইকে আবার বার্তা দেওয়া হয়, ‘‘যতটা দরকার ছিল, করা হয়েছে, আর এগোবেন না।’’ ইরাকি পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানো পৌঁছনোর চেষ্টা করলেও তাদের রুখে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
রবিবার ইরান-সমর্থিত ইরাকি গোষ্ঠী কাতায়েব হিজবুল্লার ২৫ জন জঙ্গি মার্কিন হানায় নিহত হওয়ার পরেই এই ঘটনা। মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ইরাকি ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়ে এক মার্কিন ঠিকাদারকে মেরে ফেলেছিল ওই জঙ্গিরা। রবিবার তার জবাব দেয় আমেরিকা। ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন দূতাবাস রক্ষা করতে ইরাকি সেনা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে বলে আশা করছেন তিনি।
আজ বিক্ষোভকারীরা মার্কিন দূতাবাসের প্রধান ফটক ভেঙে দিয়ে সেখানকার বিভিন্ন দেওয়ালে আমেরিকা-বিরোধী কথা লিখে দিয়েছেন। পুলিশের দাবি, এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কারও কারও পরনে ছিল জঙ্গি-পোশাক। ইরান-ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু জঙ্গি গোষ্ঠীর কমান্ডাররা এই বিক্ষোভে যোগ দেন বলেও তারা জানিয়েছে। দূতাবাসের ছাদ থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছিল মার্কিন সেনা। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। তিন বিক্ষোভকারী তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে দূতাবাসের কর্মীরা নিরাপদেই আছেন বলে দাবি। দূতাবাস খালি করার প্রয়োজন হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা সেখানকার একটি দেওয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দেন, যাতে লেখা, ‘আমেরিকা একটি আগ্রাসী শক্তি।’ কোথাও আবার দেওয়ালে লেখা, ‘আমেরিকা নিপাত যাক।’ দূতাবাসের দেওয়াল লক্ষ্য করে জল আর পাথর ছুড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পরে জানলা ভেঙে সেখানে টাঙিয়ে দিয়েছেন নিজেদের গোষ্ঠীর হলুদ পতাকা। ইরাকের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ইয়াসিন আল-ইয়াসেরি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন, ইরাকি জঙ্গি গোষ্ঠীর উপরে মার্কিন হামলার ফল গুরুতর হবে। এটা তারই একটা প্রমাণ। আমাদের সরকারের পক্ষে অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।’’ ওই এলাকায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন আল-ইয়াসেরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy